অমূল্যধন মুখোপাধ্যায় (১) (১৮৯৮–১৯৭১১-১৯৭৭) চব্বিশ পরগনা। বঙ্গবাসী কলেজ থেকে আইএস, সি, পাশ করে মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সময় যুগান্তর বিপ্লবী দলের সঙ্গে যুক্ত হন। অসহযোগ আন্দোলনে অংশ গ্ৰহণ করায় কারাদণ্ড হয়। মুক্তি পাবার পর মেডিক্যাল কলেজে প্রবেশের অনুমতি না পেয়ে ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুলে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে এল-এমএফ, পাশ করেন। সুদূর গ্রামাঞ্চলের ডাক্তাররা যাতে আধুনিক চিকিৎসার অগ্ৰগতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে পারেন এই উদ্দেশ্যে ১৯২৮ খ্রী. ‘চিকিৎসা জগৎ’ নামে একটি পত্রিকা প্ৰকাশ করেন। ইণ্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তিনি অন্যতম প্ৰতিষ্ঠাতা সদস্য ও ১৯৫০ খ্রী. ঐ অ্যাসোসিয়েশনের মুখপত্রের সম্পাদক হন। কলিকাতার দুটি প্রাইভেট মেডিক্যাল স্কুলকে একত্রিত করে ‘ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ’ প্রতিষ্ঠায় তার প্রচেষ্টা উল্লেখযোগ্য। পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে (১৯৫২-৫৭) পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিক্যাল এড়ুকেশন ও রিসার্চ ইন্স্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫২ খ্রী. এথেন্সে অনুষ্ঠিত বিশ্ব মেডিক্যাল পত্রিকার সম্পাদকদের কনফারেন্সে গদান করেন।
অমূল্যধন মুখোপাধ্যায় (২) (১৯০২–২০০৩-১৯৮৪) গ্রাম-জলপাইগুড়ি। খ্যাতনামা অধ্যাপক ও–সাহিত্যিক। নন-কলেজিয়েট ছাত্র হিসাবে ইংরেজীতে পদকসহ প্ৰথম শ্রেণীতে এম.এ. পাশ রন। বি. এ. পরীক্ষায় বাংলায় প্রথম স্থান অধিকার করায় তাঁকে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্কিমচন্দ্র স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। ১৯৩০ খ্রী. ‘Principles of Bengali Prosody’ গবেষণাপত্রের জন্য প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি ও মোয়াট মেডেল লাভ করেন। দুবছর এজিবেঙ্গলের অডিটর পদে নিযুক্ত থেকে পরে অধ্যাপনাকে বৃত্তি হিসাবে গ্ৰহণ করেন। ১৯২৭-৩৮ খ্রী. রংপুর কলেজে, ১৯৩৮-৬৫ খ্রী. কলিকাতা আশুতোষ কলেজে এবং সেখান থেকে অবসর গ্রহণের পর ১৯৬৫-৭০ খ্ৰী. যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজীর অধ্যাপক হিসাবে কাজ করেছেন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সরোজিনী বসু স্বর্ণপদক’ দ্বারা সম্মানিত হন (১৯৬৮)। ইংরেজী ও বাংলা সাহিত্য, বাংলা ও সংস্কৃত ছন্দ সম্পর্কে গবেষণামূলক প্ৰবন্ধ ও পুস্তক তিনি লিখেছেন। বাংলায় বৈজ্ঞানিক প্ৰণালীতে ছন্দ-চর্চার তিনি প্রবর্তক। বাংলা ছন্দে পূর্ব-পূর্বানুবাদের আবিষ্কর্তা। রচিত খযোগ্য গ্ৰন্থ : ‘বাংলা ছন্দের মূলসূত্র’, ‘কবিগুরু’, ‘আধুনিক সাহিত্য জিজ্ঞাসা’, ‘Sanskrit Prosody, its Evolution’ প্রভৃতি। এছাড়া তিনি ছোটদের জন্য মজার মজার গল্প ও বড়দের জন্য ‘বেতালভট্ট’ ছদ্মনামে রম্যরচনা লিখেছেন। শনিবারের চিঠিতে প্রকাশিত তাঁর রঙ্গব্যঙ্গ-রচনা ‘কাব্যের উপেক্ষিতা’, ‘আমরা ও তোমরা’, ‘পূজার ছুটি’ প্রভৃতি।
Leave a Reply