অমূল্যচরণ উকিল (১৪-১১-১৮৮৮ – ২৩-২-১৯৭০) বনগ্রাম-যশোহর। নিবারণচন্দ্ৰ। লব্ধপ্ৰতিষ্ঠ চিকিৎসক। ছাত্রাবস্থায় স্বদেশী আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯১৪ খ্রী. কলিকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম.বি. পাশ করে খুলনার দৌলতপুর কলেজে উদ্ভিদবিদ্যার অধ্যাপক হিসাবে কাজ করার সময় সশস্ত্র বিপ্লব আন্দোলনের সঙ্গে বিশেষভাবে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৭ খ্রী. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ডাক্তারা-হিসাবে যোগ দিয়ে মীরাটে চলে গেলেও কলিকাতার আর্মেনিয়ান স্ট্রীটের ডাকাতি মামলায় তাঁকে অভিযুক্ত করে সলিটারী জেলে বন্দী রাখা হয়। এর পরেও অনেকদিন বাঁকুড়া ও বনগ্রামে। অন্তরীণ ও নজরবন্দী থাকেন। ১৯২১ খ্রী. প্যারিসে গিয়ে পাস্তুর ইন্স্টিটিউটে দেড় বছর গবেষণার কাজে নিযুক্ত থাকেন এবং তার গবেষণালব্ধ আবিষ্কার ‘উকিল ব্যাসিলি’ নামে চিহ্নিত হয়। ১৯২৯ খ্রী. ‘ঘোষ ট্রাভেলিন ফেলোশিপ পেয়ে যক্ষ্মারোগ-বিষয়ে গবেষণার জন্য পুনরায় প্যারিস ও বার্লিন যান। ১৯৩১ খ্রী. কলিকাতা মেডিক্যাল কলেজের চেস্ট ডিপার্টমেন্টের গোড়াপত্তন করেন। ১৯৩৫ খ্ৰী. গবেষণার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের জন্য ‘Coates Medal’ লাভ করেন। ১৯৩৮-৫৭ খ্রী. পর্যন্ত ‘সায়েন্স অ্যাণ্ড কালচার’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য ১৯৪২ খ্রী। তাকে ‘কাইজার-ই-হিন্দ’ স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। ১৯৪৭ খ্রী. কলিকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রথম ভারতীয় প্রিন্সিপ্যাল ও সুপারিন্টেনডেন্ট নিযুক্ত হন। অধ্যক্ষ থাকাকালে ১৯৪৮ খ্ৰী. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আমন্ত্রণে সেখানের বহু বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালে বক্তৃতা দেন। মার্কিন কলেজ অব বেস্ট ফিজিশিয়ানস তাঁকে E.C.C.P. উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৫১ খ্রী. সোভিয়েট সরকারের আমন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক দলের সদস্য হিসাবে রাশিয়া ভ্ৰমণ করেন। ১৯৫৫ খ্রী. ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অব ইণ্ডিয়া এবং ইণ্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সর্বভারতীয় সভাপতি নির্বাচিত হন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র আমন্ত্রণে দুবার ইউরোপ যান। সে বছর তিনি কলিকাতার শেরিফ নিযুক্ত হন। যক্ষ্মরোগ চিকিৎসা ও গবেষণার ক্ষেত্রে তার কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৬৬ খ্রী. তাকে রাষ্ট্রপতির পদক প্ৰদান করা হয়। তিনিই সর্বপ্রথম এই সম্মান লাভ করেন। এশিয়াটিক সোসাইটির সভ্য এবং পরে সভাপতি হয়েছিলেন।
পূর্ববর্তী:
« অমূল্যচন্দ্ৰ সেনগুপ্ত
« অমূল্যচন্দ্ৰ সেনগুপ্ত
পরবর্তী:
অমূল্যচরণ বসু »
অমূল্যচরণ বসু »
Leave a Reply