অভেদানন্দ স্বামী (২.১০.১৮৬৬—৮.৯.১৯৩৯) কলিকাতা। রসিকলাল চন্দ। পূর্বাশ্রমের নাম কালীপ্রসাদ। ওরিয়েন্টাল সেমিনারি থেকে এন্ট্রান্স পাশ করেন। যৌবনের প্রারম্ভে হিন্দুশাস্ত্ৰাদি অধ্যয়ন করেন এবং খ্ৰীষ্টান ধর্মপ্রচারকদের সান্নিধ্যে খ্ৰীষ্টধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হন। ব্রাহ্মনেতাদের বক্তৃতা এবং শশধর তর্কচূড়ামণির ষড়্দর্শনের আলোচনা শোনার ফলে শোনার ফলে হিন্দু দর্শনের প্রতি অনুরাগ জন্মায়। পণ্ডিত কালীবর বেদান্তবাগীশের নিকট পতঞ্জলির যোগসূত্র পড়ে হঠযোগ ও রাজযোগ সাধনার চেষ্টা করেন। এই সময়ে দক্ষিণেশ্বরে রামকৃষ্ণদেবের সমীপে উপস্থিত হন (১৮৮৪)। ১৮৮৬ খ্রী. রামকৃষ্ণদেবের তিরোধানের পর তিনি সন্ন্যাস গ্রহণ করে হিমালয় থেকে কুমারিকা পর্যন্ত সমস্ত তীৰ্থস্থান পরিভ্রমণ করেন। ১৮৯৬ খ্রী. স্বামী বিবেকানন্দের আদেশে লন্ডন যান এবং সেখানে রাজযোগ, জ্ঞানযোগ ও বেদান্ত সম্বন্ধে নিয়মিত বক্তৃতাদি দেন। ঐ সময়ে পল, ডয়সন ও ম্যাক্সমুলার প্রমুখ মনীষীদের সঙ্গে তিনি পরিচিত হন। ১৮৯৭ খ্রী. তিনি আমেরিকায় গিয়ে নিউইয়র্কে বেদান্ত আশ্রমের ভার গ্ৰহণ করেন। ১৮৯৮ খ্রী. আমেরিকান দার্শনিক উইলিয়াম জেমসের সঙ্গে বহুত্বের মধ্যে একত্ব সম্বন্ধে আলোচনা করেন। ১৯০৬ খ্রী. একবার ভারতে আসেন। পরে আমেরিকা, কানাডা, মেক্সিকো, আলাস্কা, জাপান, হংকং, ক্যান্টন, ম্যানিলা প্রভৃতি স্থানে ধর্মপ্রচারার্থ যান। ১৯২১ খ্রী. আমেরিকা ত্যাগ করে হনলুলুতে প্যান-প্যাসিফিক শিক্ষা সম্মেলনে যোগদান করে ভারতে ফেরেন। ১৯২২ খ্রী. তিব্বতের পথে কাশ্মীর হয়ে লাদাকের বৌদ্ধ মন্দির হেমসগুম্ফা পরিদর্শনকালে সেখান থেকে যীশুখ্ৰীষ্ট্রের অজ্ঞাত জীবনীর কিয়দংশ উদ্ধার করে তার ‘কাশ্মীর ও তিকবিতে গ্রন্থে প্রকাশ করেন। ১৯২৩ খ্রী. কলিকাতায় ফিরে শ্ৰীরামকৃষ্ণ বেদান্ত সোসাইটি ও ১৯২৪ খ্ৰী. দাৰ্জিলিং-এ শ্ৰীরামকৃষ্ণ বেদান্ত আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। কলিকাতার শ্ৰীরামকৃষ্ণ বেদান্ত মঠে। মৃত্যু হয়। রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ: ‘Gospel of Ramakrishna Reincarnation’, ‘How to be a Yogi’, ‘India and Her People’, ‘আত্মবিকাশ’, ‘বেদান্তবাণী’, ‘হিন্দুধর্মে নারীর স্থান’, ‘মনের বিচিত্র রূপ’ প্রভৃতি। তার প্রতিষ্ঠিত ‘বিশ্ববাণী মাসিক পত্রিকাটি ১৩৩৪-১৩৪৫ বৰ্ণ পর্যন্ত সম্পাদনা করেন।
পূর্ববর্তী:
« অভিলাষ ঘোষ
« অভিলাষ ঘোষ
পরবর্তী:
অভয়চরণ দাশ »
অভয়চরণ দাশ »
Leave a Reply