রবীন্দ্র গুহ (জন্ম: অক্টোবর ২৫, ১৯৩৪) বাংলা সাহিত্যে হাংরি আন্দোলন ও নিমসাহিত্য আন্দোলনের একজন বিশিষ্ট কবি, গল্পকার ও ঔপন্যাসিক।
জীবনী
রবীন্দ্র গুহর জন্ম বরিশাল জেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামে । তাঁর পিতা সতীশচন্দ্র ছিলেন শিক্ষক সগ্ঙীতশিল্পী ও দার্শনিক । মাতার নাম উত্তমাসুন্দরী । রবীন্দ্র গুহ সমাজ বিজ্ঞান ও ইনডাস্ট্রিয়াল ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর । কলকাতা, দুর্গাপুর, ভিলাই ও দিল্লিতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্হায় কাজ করেছেন ।
আন্দোলনের সদস্যতা
১৯৬৩ সালে মলয় রায়চৌধুরী ও সমীর রায়চৌধুরীর সঙ্গে পরিচয়ের পর রবীন্দ্র গুহ প্রথমে হাংরি আন্দোলন – এ যোগ দিয়েছিলেন । ষাটের সকের শেষে তিনি কলকাতা থেকে দুর্গাপুর চলে যান এবং সেখানে মৃণাল বনিক, সুধাংশু সেন, বিমান চট্টোপাধ্যায় প্রমুখের সঙ্গে নিমসাহিত্য নামে একটি পৃথক আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটান । নিমসাহিত্য আন্দোলনকারীদের বক্তব্য ছিল যে সাহিত্যের কোনো ইশতাহার হতে পারে না । সত্তর দশকের শেষে নিমসাহিত্য আন্দোলন ফুরিয়ে যায় কেন না ততদিনে পশ্চিম বাংলায় নকশাল আন্দোলন সমাজকে একটি ভিন্ন রূপ দিয়েছে ।
সাহিত্যধারা
বাংলার বাইরে জীবনের বেশির ভাগ সময় কাটানোর ফলে তাঁর কবিতা ও গদ্যের বুননকে তিনি একটি ভিন্ন আদল ও আদরা দিতে পরেছেন, যাকে সুকুমার চৌধুরী, অজিত রায়, সুধাংশু সেন, মৃণাল বণিক, বারীন ঘুষাল, কমল চকৃবর্তী, সঞ্জীব নিয়োগী প্রমুখ আলোচক বলেছেন ডায়াসপোরিক । নিমসাহিত্য আন্দোলনটি ছিল বাংলা সাহিত্যে কলকাতা কেন্দ্রিকতার বিরুদ্ধে প্রন্তিকের আস্ফালন । রবীন্দ্র গুহ বলেছেন, ‘নিমসাহিত্য’ একটি গণিত চেতনা; সাহিত্য ও অভিজ্ঞতার বদলকরণ; নতুন ব্যকরণ । সুধাংশু সেন বলেছেন, নিমসাহিত্য স্বৈরসাহিত্য নয়; নিমশব্দ সরাসরি আসে না; নিমশব্দ গঠন করতে হয় ; রবীন্দ্র গুহ নিজস্ব শব্দ ও বাক্য গঠন করে নিমগদ্য ো নিমপদ্য লিখেছেন । আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. তপোধীর ভট্টাচার্য বলেছেন, রবীন্দ্র গুহ অনবরত নিজেকে ও শিল্প সংবিদকে বিনির্মাণ করেছেন ; জীবনের নতুন নতুন চিহ্ণায়ণ প্রকরণের খঁোজে তিনি সামাজিক ও রাজনৈতিক আকর্ষণের গভীরে প্রবেশ করেছেন; ফলে আত্মিক সংকটের নানা মাত্রা তাঁর লেখায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ।
গ্রন্হতালিকা‘ উপন্যাস’: রাজপুতানার ইতিকথা (১৯৬৫) । প্রেম আতঙ্ক সন্ত্রাস (১৯৬৬) । পদধ্বনি প্রতিধ্বনি (১৯৬৬) । মেবারের পতন (১৯৬৭) । লোহারিয়া (১৯৬৯) । দহন (১৯৬৯) । দ্রোহপুরুষ (১৯৯৮) । সুর্যের সাত ঘোড়া (১৯৯৯) । নাভিকুণ্ড ঘিরে (২০০০) । শিকঞ্জের পাখি খামোশ (২০০১) । ধুনধলা ( ২০০৩) ।
‘আত্মজীবনী’ : আমি দগ্ধ একজন মানুষ (২০০৪) ।
‘নাটক’ : নাটকে লিপ্সা নেই (১৯৭৯) ।
‘গল্পগ্রন্হ’ : জনমানুষ (১৯৮১) । জৈগুণের পদ্ম (১৯৯৮) । গল্পের ভুবন (২০০১) ।
‘কাব্যগ্রন্হ’ : রবীন্দ্র গুহর কবিতা (বাং ১৩৭২) । নির্বাচিত কবিতা (১৯৯৪) । দরিদ্র যুবরাজ (১৯৯৬) । হাসান তারিকের রূপোলি ইলিশ (২০০৩) । দিল্লি হাটার্স ( ২০০৩ ) ।
———————–
সূত্রঃ ৪
Leave a Reply