ফাল্গুনী রায় ( জন্ম ৭.৬.১৯৫৪; মৃত্যু ৩১.৫.১৯৮১ ) বাংলা সাহিত্যে হাংরি আন্দোলন-এর একজন প্রখ্যাত কবি । কবিতা রচনার জন্য মাত্রাতিরিক্ত মাদকসেবন ও উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের কারণে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মারা যান । কম বয়সে মৃত্যুর জন্য তাঁকে নিয়ে বহু অতিকথা প্রচলিত হওয়ায়, তরুণ কবিদের নিকট তিনি আজ কিংবদন্তি, এবং তাঁর একমাত্র কাব্যগ্রন্হ নষ্ট আত্মার টেলিভিসন ১৯৭৩ সালের পর বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিন সংস্হা দ্বারা এতাবৎ নয়বার প্রকাশিত হয়েছে ।
পারিবারিক পরিচয়
ফাল্গুনী রায়-এর জন্ম কলকাতার বরানগরের প্রখ্যাত জমিদার রতনলাল রায়ের পরিবারে । তাঁর দাদা তুষার রায় ছিলেন কৃত্তিবাস গোষ্ঠীর কবি । স্বাধীনতার পর জমিদারি প্রথা অবসানের কারণে ফালগুনীর প্রজন্মে পরিবারটি আকল্পনীব দুর্দশায় আক্রান্ত হয়, এবং ফালগুনীর চরিত্রে তার বিপুল প্রভাব পড়ে । তাঁদের পারিবারিক ভাঙনটিই ফালগুনীর কবিতার ভাঙা আঙ্গিকে প্রতিফলিত হয়েছে বলে আলোচকরা মনে করেন ।
হাংরি আন্দোলন
ফাল্গুনী রায় হাংরি আন্দোলন-এ আকৃষ্ট হন বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হাংরি আন্দোলনকারীদের কার্যকলাপ বিবিধ খবর পাঠ করার পর । মাদকসেবন ও বোহেমিয়ান জীবনযাপনের কারণে অচিরেই তিনি কলকাতায় হাংরি আন্দোলনের মুখ হয়ে ওঠেন । সেকারণে তাঁকে ফরাসি কবি জঁ আর্তুর র্যাঁবোর সঙ্গে তুলনা করা হয় ।
নষ্ট আত্মার টেলিভিসন
তাঁর জীবদ্দশায়, ১৯৭৩ সালের ১৫ই আগস্ট, তাঁর একমাত্র কাব্যগ্রন্হ নষ্ট আত্মার টেলিভিসন মাত্র কয়েকটি কবিতা নিয়ে চটি আকারে প্রকাশিত হয়েছিল । পরবর্তীকালে গবেষক ও আগ্রহীরা আরও কিছু কবিতা ও গদ্য খুঁজে পেয়েছেন ও গ্রন্হটিতে সংযোজন করেছেন । সেকারণে তাঁর গ্রন্হটি বারংবার প্রকাশিত হয়েছে । এ পর্যন্ত টাঁর লেখা ৪২টি কবিতা ও ৬টি গদ্য পাওয়া গেছে । কবি উৎপলকুমার বসু বলেছেন যে এই গ্রন্হটি বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতাবাদের সমাপ্তি সূচিত করে ।
—————————–
সূত্রঃ ৪
Leave a Reply