অরবিন্দ ঘোষ, শ্ৰীঅরবিন্দ (১৫ই আগস্ট, ১৮৭২- ৫ই ডিসেম্বর, ১৯৫০) কলিকাতা। কৃষ্ণধন। প্রখ্যাত রাজনৈতিক নেতা, দার্শনিক ও যোগী। সাত বছর বয়সে শিক্ষার জন্য বিলাতবাসী হন। আই সি. এস. পরীক্ষায় পাশ করেন, কিন্তু অশ্বচালনা পরীক্ষার সময় অনুপস্থিত থাকায় চাকরির জন্য মনোনীত হন নি। ১৮৯২ খ্রী. কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ট্রাইপস’ বৃত্তিলাভ করেন। ১৮৯৩ খ্রী. দেশে ফিরে বরোদা কলেজের অধ্যাপক ও পরে অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। এখানে মহারাষ্ট্রের গুপ্ত বিপ্লবী দলের নেতা ঠাকুর সাহেবের কাছে বিপ্লবমন্ত্রে দীক্ষিত হন। ১৯০২ খ্ৰী. ভ্ৰাতা বারীন্দ্ৰকুমারকে বিপ্লবী দল গঠনের জন্য বাঙলা দেশে পাঠান। ১৯০৫ খ্রী. বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদ আন্দোলনে যোগ দিয়ে বরোদার চাকরি ছেড়ে দেন। ১৯০৬ খ্রী. নবপ্রতিষ্ঠিত জাতীয় বিদ্যালয়–ন্যাশনাল কলেজের অধ্যক্ষপদ গ্ৰহণ করেন। পরে রাজা সুবোধ মল্লিকের অনুরোধে ইংরেজী দৈনিক ‘বন্দেমাতরম’-এর সম্পাদনার দায়িত্ব নেন। ১৯০৮ খ্রী. ‘বন্দেমাতরম’ পত্রিকায় রাজদ্রোহমূলক রচনার জন্য এবং পরে আলিপুর বোমা মামলার আসামীরূপে আদালতে অভিযুক্ত হন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন এই মামলা পরিচালনা করেন এবং অরবিন্দের মুক্তিলাভ হয়। তারপর তিনি সনাতন ধর্ম প্রচারে ও জাতীয়দল পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করেন এবং ইংরেজী সাপ্তাহিক ‘কর্মযোগিনী ও বাংলা ‘ধর্ম’ পত্রিকার সম্পাদনা শুরু করেন। কিছুকাল পরে রাজনৈতিক জীবন পরিত্যাগ করে তিনি এবং ফরাসী মহিলা মাদাম পল রিশার (শ্ৰীমা) পণ্ডিচেরীতে আশ্রম স্থাপন করে যোগসাধনা এবং সমাজসেবায় ব্ৰতী হন। দৰ্শন-বিষয়ক ইংরেজী পত্রিক ‘আৰ্য’-র মাধ্যমে প্ৰবন্ধ রচনা করে আধ্যাত্মিক জীবনের তত্ত্বসমূহ বোঝাবার চেষ্টা করেন। এর আগে বিভিন্ন সময়ে ‘সন্ধ্যা’ ও ‘যুগান্তর’-এর সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। রচিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩৮। এর মধ্যে ইংরেজী ৩২টি এবং বাংলা ৬টি। এ ছাড়াও ‘Speeches of Aurobindo’ ও ‘অরবিন্দের পত্র’ নামে দু’খানি গ্রন্থ আছে। ‘The Life Divine’, ‘Essays on Gita’, ‘Savitri’, ‘Mother India’, ‘The Hero and the Nymph’ (বিক্রমোর্বশী), ‘Urvasie’, ‘Song of Myrtilla and Other Poems’, ‘The Age of Kalidasa’, ‘A System of National Education’, ‘The Renaissance in India’, ‘কারা কাহিনী’, ‘ধর্ম ও জাতীয়তা’ প্রভৃতি গ্রন্থগুলি বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
অরবিন্দ ঘোষ (১৭-৩-১৯২৪–৭-১১-১৯৮৪) যশোহর। পিতার কর্মক্ষেত্র খুলনা শহরে ছাত্রজীবন কাটে। সাংসারিক প্রয়োজনে কলেজের পড়া শেষ করার আগেই তিনি প্ৰথমে রেলের লোকোতে এবং পরে অবিভক্ত বাংলার প্রদেশিক সরকারের অধীনে রেশনিং দপ্তরে চাকরি নেন। রাজনীতির বৃহত্তর প্রয়োজনে খাদ্যদপ্তরে কর্মরত থাকা-কালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছা-অবসর গ্ৰহণ করেন। পশ্চিমবঙ্গ তথা সারা ভারতের রাজ্য সরকারী কর্মচারী আন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা, এবারই জুলাই কমিটির অন্যতম স্থপতি, মধ্যবিত্ত কর্মজীবী আন্দোলনের একজন সংগঠক, রাজ্যসভার সদস্য এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন।
Leave a Reply