অতুল বসু (১৮৯৮ – ১৯৭৭) (ইংরেজি: Atul Basu) একজন বাঙালি চিত্রশিল্পী। তিনি প্রাকৃতিক দৃশ্য, প্রতিকৃতি এবং পল্লীদৃশ্য বাস্তবানুগ ধারায় ফুটিয়ে তুলতে বিশেষ পারঙ্গম ছিলেন। ছবি আঁকার জন্য তিনি মূলত তেল রং ব্যবহার করতেন।
জীবনী
অতুল বসু ১৮৯৮ সালে বাংলাদেশের ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। তার ছেলেবেলা ময়মনসিংহ শহরেই কেটেছে। ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন-এর ময়মনসিংহ শাখায় তার প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন হয়। এরপর পড়াশোনা করেন ভারতের পশ্চিম বঙ্গের রাজধানী কলকাতার জুবিলি আর্ট একাডেমিতে। এই আর্ট একাডেমির পাঠ্যসূচি বাংলার অন্য আট দশটি সাধারণ বিদ্যাপীঠের মত ছিল না। সেখানে তার সহপাঠী ছিলেন হেমেন্দ্রনাথ মজুমদার এবং ভবানীচরণ লাহা। এখানকার ছাত্র থাকাকালীন সময়ে তিনি লন্ডনে অধ্যয়ন এবং ইউরোপ জুড়ে বিশেষ ভ্রমণের জন্য বৃত্তি পান। তার চিত্রকলার বিষয়বস্তু বিনির্মাণে এই ভ্রমণ বিশেষ প্রভাব রেখেছিল।
চিত্রকলা বিষয়ক তিনটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণে অতুল বসুর ভূমিকা ছিল। ১৯১৯ সালে হেমেন্দ্রনাথ মজুমদার ইন্ডিয়ান একাডেমি অফ আর্ট প্রতিষ্ঠা করেন। এক্ষেত্রে অতুল বসু তাকে সহায়তা করেছিলেন। এই প্রতিষ্ঠান বাস্তববাদের উপর গুরুত্বারোপ করত এবং বাংলার স্কুলগুলোতে এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির চেষ্টা করত। ওয়াস টেকনিকে অঙ্কিত লিরিক্যাল থিমের সাথে এর সুস্পষ্ট পার্থক্য ছিল। এই একাডেমি মূলত প্রতিকৃতি, প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং পল্লীর চিত্র অংকনের ধারাকে অনুসরণ করেছিল। ১৯২১ সালে ভবানীচরণ লাহার সহযোগিতায় অতুল বসু সোসাইটি অফ ফাইন আর্টস প্রতিষ্ঠা করেন। এই সোসাইটি প্রচলিত প্রাচ্য কলাচিত্রের তৎপরতা ও প্রদর্শনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছিল। এছাড়া ১৯৩৩ সালে প্রদোৎকুমার ঠাকুর কর্তৃক একাডেমি অফ ফাইন আর্টস প্রতিষ্ঠার সময়ও অতুল বসু সক্রিয় সহযোগিতা করেন। তিনি কিছুকাল আবার কলকাতা স্কুল অফ আর্টস-এর অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন।
চিত্রকর্ম
মূলত তেল রং ব্যবহার করে অতুল বসু তার শৈল্পিক অভিব্যক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেন। তাঁর চিত্রকর্মে কোমল উপস্থাপনা বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল। কেবল সে চিত্রশিল্পীর পক্ষেই এটি সম্ভব যে তার শৈল্পিক পেশায় সূক্ষ্ণ কারিগরি তারতম্য সম্বন্ধে জানে। এছাড়া তার ছবিগুলোতে তুলির ব্যবহার অতি ব্যপৃত ছিল। তিনি উইন্ডসোর দূর্গ এবং বাকিংহাম প্রাসাদে সংরক্ষিত মূল বিষয়গুলো থেকে প্রতিকৃতি অংকন করে বিখ্যাত হন। তার আত্মপ্রতিকৃতির শৈল্পিক মান ছিল অতি উঁচু।
বিখ্যাত চিত্রকর্মসমূহ:
কল্পনাপ্রবণ ও স্মৃতি জাগরুক স্ফিংস (তেল প্লাইউড দ্বারা অংকিত)
আত্মপ্রতিকৃতি (১৯৪৫)
সূত্রঃ ৪
Leave a Reply