নবীনচন্দ্র সেন (ফেব্রুয়ারি ১০, ১৮৪৭ – জানুয়ারি ২৩, ১৯০৯) বাংলা সাহিত্যের একজন উল্লেখযোগ্য কবি। চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার অন্তর্গত পশ্চিমগুজরার (নোয়াপাড়া) সুপ্রসিদ্ধ প্রাচীন জমিদার পরিবারে তাঁর জন্ম। তাঁর পিতার নাম গোপীমোহন রায় এবং মাতার নাম রাজরাজেশ্বরী। পাঁচবছর বয়সে তিনি লেখাপড়া শুরু করেন। ১৮৬৩ সালে তিনি চট্টগ্রাম স্কুল (বর্তমানে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল) থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় প্রথমশ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতা যান। ১৮৬৫ সালে তিনি দ্বিতীয় বিভাগে এফএ এবং জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইন্সটিটিউশন (স্কটিশচার্চ কলেজ) থেকে ১৮৬৯ সালে বিএ পাশ করেন।
সাহিত্যকর্ম
নবীনচন্দ্রের কাব্যের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হচ্ছে পলাশির যুদ্ধ (১৮৭৫) এবং রৈবতক (১৮৮৬), কুরুক্ষেত্র (১৮৯৩) ও প্রভাস (১৮৯৬) । শেষের কাব্য তিনটি আসলে একটি বিরাট কাব্যের তিনটি স্বতন্ত্র অংশ । এই কাব্য তিনটিতে কৃষ্ণচরিত্রকে কবি বিচিত্র কল্পণায় নতুনভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন । কবির মতে আর্য ও অনার্য সংস্কৃতির সংঘর্ষের ফলে কুরুক্ষেত্রযুদ্ধ হয়েছিল । এবং আর্য অনার্য দুই সম্প্রদায়কে মিলিত করে শ্রীকৃষ্ণ প্রেমরাজ্য স্থাপন করেছিলেন ।
নবীনচন্দ্রের অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুই ভাগ অবকাশরঞ্জিনী (১৮৭১), (১৮৭৭), ক্লিওপেট্রা (১৮৭৭), অমিতাভ (১৮৯৫), অমৃতাভ, রঙ্গমতী (১৮৮০) এবং খৃষ্ট (১৮৯০) । নবীনচন্দ্র ভগবতগীতা এবং মার্কণ্ডেয়-চণ্ডীরও পদ্যানুবাদ করেছিলেন । নবীনচন্দ্রের কবিত্ব জায়গায় জায়গায় চমৎকার কিন্তু কবি এই চমৎকারিত্ব সব জায়গায় বজায় রাখতে পারেন নি । এই কারণে এবং কাব্য বাঁধুনি না থাকায় নবীনচন্দ্রের কবিত্বের ঠিকমত বিচার করা কঠিন হয়ে পড়েছে ।
নবীনচন্দ্র কিছু গদ্যরচনাও করেছিলেন । তাঁর আত্মকথা আমার জীবন একটি উপন্যাসের মত সুখপাঠ্য গ্রন্থ । তিনি ভানুমতী নামে একটি উপন্যাসও রচনা করেছিলেন ।
সুত্রঃ ৪
Leave a Reply