শক্তি চট্টোপাধ্যায় (জন্ম নভেম্বর ২৫, ১৯৩৪ – মৃত্যু মার্চ ২৩, ১৯৯৫) বাংলা সাহিত্যে জীবনানন্দ – উত্তর যুগের একজন প্রধান লিরিক কবি ।
পারিবারিক পরিচয়
শক্তি চট্টোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের জয়নগর – মজিলপুরের দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । দারিদ্রের কারণে তিনি স্নাতক পাঙ অর্ধসমাপ্ত রেখে প্রেসিডেন্সি কলেজ ছাড়েন, এবং সাহিত্যকে জীবিকা করার উদ্দৈশ্যে উপন্যাস লেখা আরম্ভ করেন । প্রথম উপন্যাস লেখেন কুয়োতলা । কিন্তু কলেজ – জীবনের বন্ধু সমীর রায়চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর বনাঞ্চল – কুটির চাইবাসায় আড়াই বছর থাকার সময়ে শক্ত চট্টোপাধ্যায় একজন সফল লিরিক কবিতে পরিণত হন । একই দিনে বেশ কয়েকটি কবিতা লিখে ফেলার অভ্যাস গড়ে ফেলেন তিনি । শক্তি নিজের কবিতাকে বলতেন পদ্য ।
হাংরি আন্দোলন
১৯৬১ সালের নভেম্বরে ইশতাহার প্রকাশের মাধ্যমে যে চারজন কবিকে হাংরি আন্দোলন – এর জনক মনে করা হয় তাঁদের মধ্যে শক্তি চট্টোপাধ্যায় অন্যতম । অন্য তিনজন হলেন সমীর রায়চৌধুরী, দেবী রায় এবং মলয় রায়চৌধুরী । শেষোক্ত তিনজনের সঙ্গে সাহিত্যিক মতান্তরের জন্য ১৯৬৩ সালে তিনি হাংরি আন্দোলন ত্যাগ করে কৃত্তিবাস গোষ্ঠীতে যোগ দেন । তিনি প্রায় ৫০টি হাংরি বুলেটিন প্রকাশ করে ছিলেন । পরবর্তীকালে কৃত্তিবাসের কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও শক্তি চট্টোপাধধ্যায়ের নাম সাহিত্যিক মহলে একত্রে উচ্চারিত হতো , যদিও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় হাংরি আন্দোলন এর ঘোর বিরোধী ছিলেন এবং কৃত্তিবাস পত্রিকাব ১৯৬৬সালে সেই মনোভাব প্রকাশ করে সম্পাদকীয় লিখে ছিলেন ।
পুরস্কার
সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার সহ তিনি একাধিক পুরস্কারে সন্মানিত ।
কাব্যগ্রন্হ
এ প্রেম হে নৈঃশব্দ্য (১৯৬২)
ধর্মে আছো জিরাফেও আছো (১৯৬৭)
সোণার মাছি খুন করেছি (১৯৬৮)
অন্ধকার নক্ষত্রবীথি তুমি অন্ধকার (১৯৬৮)
হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান (১৯৬৯)
চতুর্দশপদী কবিতাবলী (১৯৭০)
পাড়ের কাঁথা মাটির বাড়ি (১৯৭১)
প্রভু নষ্ট হয়ে যাই (১৯৭২)
সুখে আছি (১৯৭৪)
ঈশ্বর থাকেন জলে (১৯৭৫)
অস্ত্রের গৌরবহীন একা (১৯৭৫)
জ্বলন্ত রুমাল (১৯৭৫)
ছিন্নবিচ্ছিন্ন (১৯৭৫)
সুন্দর এখানে একা নয় (১৯৭৬)
কবিতায় তুলো ওড়ে (১৯৭৬)
ভাত নেই পাথর রয়েছে (১৯৭৯)
আঙ্গুরী তোর হিরণ্য জল (১৯৮০)
প্রচ্ছন্ন স্বদেশ (১৯৮১)
যেতে পারি কিন্তু কেন যাবো (১৯৮৩)
কক্সবাজারে সন্ধ্যা (১৯৮৫)
ও চির – প্রণম্য অগ্নি (১৯৮৫)
মিষ্টি কথায়, বিষ্টিতে নয় (১৯৮৫)
সন্ধ্যার সে শান্ত উপহার (১৯৮৬)
এই তো মর্মর মুর্তি (১৯৮৭)
বিষের মধ্যে সমস্ত শোক (১৯৮৮)
আমাকে জাগাও (১৯৮৯)
ছবি আঁকে ছিঁড়ে ফ্যালে (১৯৯১)
জঙ্গলে বিষাদ আছে (১৯৯৪)
বড়োর ছড়া (১৯৯৪)
সেরা ছড়া (১৯৯৪)
টরে টক্কা (১৯৯৬)
কিছু মায়া রয়ে গেল (১৯৯৭)
সকলে প্রত্যেকে একা (১৯৯৯)
পদ্যসমগ্র – ১ম থেকে ৭ম খণ্ড
———————-
সূত্রঃ ৪
Leave a Reply