শহীদুল্লাহ কায়সার (ফেব্রুয়ারি ১৬, ১৯২৬ – ডিসেম্বর ১৪, ১৯৭১) একজন বাঙালি লেখক ও বুদ্ধিজীবী। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষলগ্নে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তার স্থানীয় সহযোগী আল-বদরের হাতে অপহৃত হন। ধারণা করা হয় যে, অপহরণকারীদের হাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
শৈশবকাল ও পড়ালেখাঃ
শহীদুল্লাহ কায়সার ১৯২৬ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি ফেনী জেলার মাজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর প্রকৃত নাম ছিলো নাইম মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে তিনি অর্থনীতিতে সম্মাননা সহ স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন, কিন্তু ডিগ্রী লাভ করার আগেই পড়াশোনার সমাপ্তি ঘটান।
রাজনৈতিক ভূমিকাঃ
শহীদুল্লাহ কায়সার সমসাময়িক রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। বামরাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততার কারণে তিনি একাধিকবার কারাবরণ করেন।
সাহিত্যকর্মঃ
সংশপ্তক, উপন্যাস (১৯৬৪)
সারেঙবৌ, উপন্যাস
পুরষ্কার তালিকাঃ
আদমজী সাহিত্য পুরষ্কার (১৯৬২)
বাংলা একাডেমী পুরষ্কার (১৯৬২)
মৃত্যুঃ
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আলবদর বাহিনীর কজন সদস্য তাঁকে তাঁর বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। তারপর তিনি আর ফেরেন নি।
সূত্রঃ ৪
***
শহীদুল্লাহ কায়সার (? — ডিসেম্বর ১৯৭১) মজুপুর–নোয়াখালী। মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ। বিশিষ্ট সাহিত্যিক, ‘সংবাদ’ পত্রিকার যুগ্ম-সম্পাদক, তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং পাক-ফৌজের হাতে নিহত বুদ্ধিজীবী শহীদবর্গের অন্যতম। অল্প বয়সে ব্রিটিশ আমল থেকেই রাজনীতিতে প্ৰবেশ করেন। কমিউনিস্ট পার্টির সভ্য ছিলেন। পূর্ব-পাকিস্তানে কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ থাকায় দেশবিভাগের পর অনেকদিন নানাস্থানে আত্মগোপন করে থাকেন। ১৯৫৮ খ্রী. পাক প্রেসিডেন্ট আয়ুব খানের সামরিক শাসনকালে তিনি গ্রেপ্তার হন। জেলে বসে তিনি তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘সারেং বৌ’ রচনা করেন। বইটি ১৯৬৩ খ্রী. আদমজী পুরস্কার পায়। কয়েক বছর পর ছাড়া পান এবং পূর্ববঙ্গে ১৯৭১ খ্রী. অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। বহু সাংস্কৃতিক সংস্থার সঙ্গে তিনি সংযুক্ত ছিলেন। রচিত অন্যান্য গ্ৰন্থ: ‘সংশপ্তক’, ‘তিমির বলয়’, ‘রাজবন্দীর রোজনামচা’, ‘পেশোয়ার থেকে তাসখন্দ’ প্রভৃতি। ১৯৭০ খ্রী.। তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুজিবনগর থেকে ‘সংশপ্তক’ উপন্যাসকে ‘জয়বাংলা পুরস্কার’ দেবার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৪-১২-১৯৭১ খ্ৰী. বুদ্ধিজীবী হিসাবে পাক-ফৌজের অনুচরদের হাতে পড়ে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। পূর্ববাঙলার প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ও ‘জীবন থেকে নেওয়া’ চিত্রের প্রযোজক জহির রায়হান তাঁর অনুজ।
Leave a Reply