বুদ্ধদেব বসু (৩০-১১-১৯০৮ – ১৮-৩-১৯৭৪) কুমিল্লা। আদি নিবাস বহর-বিক্রমপুর-ঢাকা। ভূদেবচন্দ্ৰ। খ্যাতনামা সাহিত্যিক। একাধারে কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সম্পাদক ও সমালোচক ছিলেন। ইংরেজী ভাষায় কবিতা, গল্প, প্ৰবন্ধাদি রচনা করে তিনি ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় প্রশংসা অর্জন করেছিলেন। অল্প বয়স থেকেই কবিতা রচনা করেছেন, ছেলে জুটিয়ে নাটকের দল তৈরি করেছেন। ১৩ বছর বয়সে নোয়াখালী ছেড়ে ঢাকায় আসেন। ‘প্ৰগতি’ ও ‘কল্লোল’ নামে দুটি পত্রিকায় লেখায় অভিজ্ঞতা সম্বল করে যে কয়জন তরুণ বাঙালী লেখক রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশাতেই রবীন্দ্রনাথের প্রভাবের রাইরে সরে দাড়াবার দুঃসাহস করেছিলেন তিনি তাদের অন্যতম। ছাত্রজীবনে ঢাকায় তিনি যে এক্সপেরিমেন্ট শুরু করেন প্রৌঢ় বয়সেও সেই এক্সপেরিমেন্টের শক্তি তাঁর মধ্যে প্ৰত্যক্ষ করা যায়। তাঁর প্রথম যৌবনের ‘সাড়া’ এবং প্রাকপ্রৌঢ় বয়সের ‘তিথিডোর’ উপন্যাস দুটি দুই ধরনের এক্সপেরিমেন্ট। কর্মজীবনের শুরুতে স্থানীয় কলেজের লেকচারারের পদের জন্য আবেদন করে দুবার প্ৰত্যাখ্যাত হলেও ইংরেজী সাহিত্যে অগাধ পণ্ডিত্যের জন্য পরিণত বয়সে তিনি আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় ভাষা ও সাহিত্য সম্পর্কে সারগর্ভ বক্তৃতা দিয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। আমাদের দেশে তুলনামূলক সাহিত্য-আলোচনার তিনি পুরোধা ছিলেন। তাঁর চল্লিশোর্ধ বয়সের রচনাগুলির মধ্যে গ্ৰীক, ল্যাটিন, সংস্কৃত—নানা চিরায়ত সাহিত্যের উপমার প্রাচুর্য দেখা যায়। ‘কবিতা’। তাঁর সম্পাদিত সাহিত্য পত্র। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ: ‘বন্দীর বন্দনা’, ‘পৃথিবীর পথে’, ‘দ্ৰৌপদীর শাড়ী’, ‘শীতের প্রার্থনা’, ‘বসন্তের উত্তর’, ‘হঠাৎ আলোর ঝালকানি’, ‘গোলাপ কেন কালো, ‘বিদেশিনী’, ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’, ‘তপস্বী ও তরঙ্গিণী, ‘কলকাতার ইলেকট্র’, ‘রাতভোর বৃষ্টি’, ‘কঙ্কাবতী’, ‘যে আঁধার আলোর অধিক’ ইত্যাদি। ‘তপস্বী ও তরঙ্গিণী’ নাটকের জন্য তিনি ১৯৬৭ খ্রী. আকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭০ খ্ৰী. ভারত সরকার কর্তৃক তিনি ‘পদ্মভূষণ’ উপাধি দ্বারা সম্মানিত হন। লেখিকা প্রতিভা বসু তাঁর স্ত্রী।
পূর্ববর্তী:
« বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত
« বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত
পরবর্তী:
বুরহান উদ্দীন »
বুরহান উদ্দীন »
Leave a Reply