অমিয় চক্রবর্তী (১০ই এপ্রিল, ১৯০১- ১৯৮৭) শ্ৰীরামপুর-হুগলি। আদি নিবাস পাবনা। গৌরীপুর এস্টেটের দেওয়ান দ্বিজেন্দ্ৰনাথ; মাতা চিন্তাশীল, প্ৰগতিবাদী অনিন্দিতা দেবী ‘বঙ্গনারী’ ছদ্মনামে লিখতেন। রবীন্দ্ৰোত্তর আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম প্রধান কবি-সমালোচক। ১৯২১ খ্রি. হাজারিবাগ সেন্ট কলম্বাস কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে ওই বছরেই প্ৰথমে ছাত্র ও পরে অধ্যাপক হিসাবে বিশ্বভারতীর সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯২৬ খ্রি. পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এম.এ. পাশ করেন। ১৯৩৭ খ্রি. অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.ফিল. ডিগ্রি পান। ১৯২৪-৩৩ খ্রি. তিনি ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য-সচিব। রবীন্দ্রজীবনের অস্তিম পর্বে তিনি কবির জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির মূল্যায়ন এবং চিন্তাভঙ্গির ক্ষেত্রে তীর সবচেয়ে অন্তরঙ্গ ও বিশ্বস্ত সহচর হয়ে উঠেছিলেন। রবীন্দ্ৰমানসে তার একটি বিরল ভূমিকা ছিল। ১৯৩০ খ্রি. রবীন্দ্রনাথের সহযাত্রীরূপে জার্মানি, ডেনমার্ক, সোভিয়েত রাশিয়া, আমেরিকা এবং ১৯৩২ খ্রি. পারস্য ও মধ্যপ্ৰাচ্য ভ্ৰমণে গিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে অধ্যাপক ও বক্তা হিসাবে পৃথিবীর নানা দেশে গিয়েছেন। ১৯৩৭-৪০ খ্রি. আধুনিক ভারতে বিবিধ আন্দোলন প্রসঙ্গে গবেষণার জন্য অক্সফোর্ড সিনিয়র রিসার্চ ফেলো হিসাবে যোগ দেন। ১৯৪৬-৪৮ খ্রি. ভারতবর্ষে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময়ে নোয়াখালি, বিহার ও অন্যত্র গান্ধীজির শান্তি পদযাত্রায় তিনিও তার সঙ্গে ছিলেন। ১৯৪৮ খ্রি. থেকে দীর্ঘদিন মার্কিন দেশে কাটিয়েছেন। ১৯৫০ খ্রি. রাষ্ট্রসংঘে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের উপদেষ্ট ছিলেন। রচিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা অন্যূন চোদ্দোটি, গদ্যগ্রন্থ দুটি। তা ছাড়া ইংরেজিতেও লেখা বই, অনুবাদ গ্ৰন্থ এবং রচনা-সংকলনও আছে। ‘চলো যাই’ গ্রন্থের জন্য ইউনেস্কোর এবং ‘ঘরে ফেরার দিন’ কাব্যের জন্য সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন। ‘পদ্মভূষণ’, ‘দেশিকোত্তম’ ও অন্যান্য অনেক সম্মানে ভূষিত ছিলেন।
পূর্ববর্তী:
« অমিতাভ ঘোষ
« অমিতাভ ঘোষ
পরবর্তী:
অমিয় দাশগুপ্ত »
অমিয় দাশগুপ্ত »
Leave a Reply