নীতীন বসু (জন্ম: ২৬ এপ্রিল ১৮৯৭ – মৃত্যু: ১৩ এপ্রিল ১৯৮৬) একজন বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক।
নীতীন বসুর আদি নিবাস বর্তমান বাংলাদেশের ময়মনসিংহের জয়সিদ্ধিতে। তাঁর পিতা কুন্তলীন খ্যাত সুগন্ধ ব্যবসায়ী হেমেন্দ্রমোহন বসু।
নীতীন বসু ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজি বিষয়ে প্রথম হয়ে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি বিএসসি তে ভর্তি হলেও পরীক্ষায় বসেননি । তাঁর পিতা হেমেন্দ্রমোহনের ক্যামেরা প্রজেক্টরের ব্যবসা ছিল। পিতার কাছ থেকেই চলচ্চিত্র সংক্রান্ত বহু বিষয়ে বিশেষ করে ফটোগ্রাফিতে প্রথম শিক্ষালাভ করেন। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে পুরীর রথযাত্রার উপর তাঁর তোলা ছবি নিউইয়র্কের ইন্টারন্যাশন্যাল নিউজ রিল কর্পোরেশন ১০০ ডলারে কিনেছিল।
চলচ্চিত্রে তাঁর প্রথম কাজ ইনকারনেশন ছবিতে। ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে নির্বাক ছবি পুনর্জন্মের তিনি ক্যামেরাম্যান ছিলেন। স্বাধীনভাবে কাজ করার তিনি প্রথম সুযোগ পান প্রফুল্ল রায়, পি.এন.রায় এবং প্রেমাঙ্কুর আতর্থীর সাথে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ক্র্যাফট এর চাষার মেয়ে ও চোরকাঁটা ছবি দুটিতে।
নিউ থিয়েটার্স স্টুডিয়োর শুরু থেকে তিনি সেখানে প্রধান ক্যামেরাম্যান এবং তাঁর ভাই মুকুল বসু শব্দযন্ত্রী হিসাবে যুক্ত হন। এই স্টুডিও থেকে ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তি পায় দেনা পাওনা এবং চণ্ডীদাস ছবি। ভাগ্যচক্র ছবিতে প্রথম প্লে-ব্যাক প্রথার প্রবর্তন হয় । নির্বাক থেকে সবাক এবং সবাক ছবিতে প্লে-ব্যাক প্রথার প্রবর্তনে তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য।
ক্যামেরার কাজ করার সাথে সাথে তিনি চিত্র পরিচালনাও শুরু করেন। তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবি যুগান্তকারী চণ্ডীদাস ছবির হিন্দি চিত্ররূপ। নিউ থিয়েটার্সে তাঁর পরিচালিত প্রায় কুড়িটি ছবির ভিতরে চণ্ডীদাস, জীবন মরণ, দেশের মাটি, দিদি, কাশীনাথ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে নিউ থিয়েটার্স ছেড়ে তিনি বম্বের চিত্রজগতে যান । সেখানে পরায়া ধন, দীদার, ওয়ারিশ, গঙ্গা যমুনা, প্রভৃতি প্রায় কুড়িটি ছবি করেন। এর মধ্যে বিচার এবং সমর ছবিদুটি বাংলায় হয়েছিল।
ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম পথিকৃৎ হিসাবে ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে ভারত সরকার তাঁকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করে । তিনি ভাল বেহালা বাজাতে পারতেন।
সূত্রঃ ১
Leave a Reply