কবিগানের আসরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢুকে পড়েছেন ‘ঋষিকবি’ হিসেবে। কবির লড়াইয়ে অবতীর্ণ দুই কবি তখন সবে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। গ্রামের কিছু ঘরবাড়ি, লোকবসতির বিচ্ছিন্ন কয়েকটি পাড়া, বাঁশের সাঁকো আর বিস্তীর্ণ ফসল কাটা মাঠ পেরিয়ে জিকাবাড়ি গ্রামের শেষ সীমান্তের রাধাকৃষ্ণ মন্দিরসংলগ্ন খেলার মাঠে পৌঁছালাম। সেখানে কবিগানের আসর বসেছে। দেখি, গ্রামের কিছু সাধারণ মানুষ—যাঁরা মূলত কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত, ক্ষুদ্র পেশাজীবী এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের লোক; তাঁরা কবিগানের কবি-সরকার, দোহার ও বাদ্যযন্ত্রীদের কেন্দ্রে রেখে গোল হয়ে বসে কবিগান উপভোগ করছেন।
কবি-সরকার ও দোহারদের সুরে-কথায়, ঢোল-কাঁসর-ঘণ্টার তাল-ধ্বনিতে, হারমোনিয়াম-বাঁশির সুরের ইন্দ্রজালে কবিগান এগিয়ে যেতে থাকে। আসরের নিয়মানুযায়ী দুই দল কবি-সরকার যথাক্রমে ডাক, মালসী, সখীসংবাদ, ধরন, পাড়ন, মিশ, মুখ, টপ্পা, ফুকার ইত্যাদি পর্বের গানের সুর-বাণীর মধ্যে সরসিক ও জ্ঞানগর্ভ কথার ঝলকানিতে প্রতিমুহূর্তে দর্শক-শ্রোতাদের বিস্ময়ে ফেলে দিচ্ছিলেন। কিন্তু আমাদের বিস্ময়ের তখনো বোধ করি বেশ বাকি। কেননা, আমরা নাগরিক পরিমণ্ডলের মানুষ, চলমান জীবনবাস্তবতায় ও যুক্তির নিষ্ঠুরতায় সহজে বিস্মিত হতে ভুলে গেছি।
সেদিন কবিগানের আসরে আলোচনার বিষয় ছিল কৃষ্ণদাস কবিরাজ বিরচিত শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত, স্থানীয়দের ভাষায় যে বিষয়বস্তুটি ‘গৌরাঙ্গলীলা’ বা ‘গৌরলীলা’ নামেই অধিক পরিচিত। আসরে একপক্ষের কবি-গায়ক সদানন্দ সরকার বিপক্ষের কবি নারায়ণচন্দ্র বালার কাছে জানতে চেয়েছিলেন রাধা-কৃষ্ণের স্বরূপ সম্পর্কে। গানের ভাষায় বলেছিলেন, ‘রাধা কী? আর কৃষ্ণ কী? করো ইহার স্বরূপ ব্যাখ্যা।’
জবাবে প্রতিপক্ষের কবি-সরকার নারায়ণচন্দ্র বালা বলেন, ‘কথাটা শক্ত। তাই একটু ভেঙে বলি, সহজ করে বলি।
‘আপনারা আমার কথা মানবেন কি না জানি না, তবুও বলি—আসলে, ভক্ত জন্ম নেয়ার পরেই তো ভগবান—এই জন্য যদি বলা হয়—ভক্ত আগে, ভগবান পরে—কথাটা মোটেও অযৌক্তিক নয়। জানি আপনারা বলবেন—ভগবান আগে ভক্ত পরে, আপনাদের কথাটা মেনে নিয়েও বলি—ভগবান আগে ঠিক আছে—কিন্তু ভক্ত হবার পরেই তো ভগবানকে জগৎ চিনল—মানুষ চিনল।
‘কৃষ্ণ আগে একা ছিলেন—নিজের শরীর নিজে স্পর্শ করছিলেন। কিন্তু কেন? নিজের অন্তরে সুপ্ত আনন্দ কত—তা আস্বাদনের জন্যই—গোবিন্দ নিজের শরীর নিজে স্পর্শ করছিলেন। কিন্তু সুখ পাচ্ছিলেন না। অমনি চিন্তা করে, মনে মনে নিজের অন্তরস্থ সুপ্ত আনন্দ-রসধারা আস্বাদনের জন্য—নিজে হয়ে দ্বিভাগাকৃতি—অর্থাৎ অর্ধেক অঙ্গে সৃষ্টি করলেন রাধা।
‘বৈষ্ণব সাহিত্যে বলেছে, “এক দেহেতে হয় না কভু রস আস্বাদন। ভিন্ন দেহ তাহার লাগি হল প্রয়োজন।” ঋষিকবি রবীন্দ্রনাথ তাঁর তেজস্বী লেখনী ধরেছেন এখান থেকে—“যখন তুমি আপনি ছিলে একা। আপনাকে তো হয় নি তোমার দেখা”।’
আমাদের বিস্ময়ের শুরু এখান থেকে। কারণ, কবিগানের আসরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢুকে পড়েছেন ‘ঋষিকবি’ হিসেবে। আর সেখানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে উচ্চারিত হলো রবীন্দ্রনাথের বলাকা কাব্যের চরণ—তবে, তা কিছুটা পরিবর্তিত রূপে। আমাদের বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না, এই পরিবর্তনটি ঘটেছে বাংলার মুখরা তথা মৌখিক-সাহিত্যের চিরায়ত নিয়মানুযায়ী। এখানে আমরা স্পষ্ট মনে করতে পারি, স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের সেই খেদ, ‘আমার কবিতা, জানি আমি, গেলেও বিচিত্র পথে হয় নাই সে সর্বত্রগামী।’ কবিগানের আসরে বসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই খেদ তাৎক্ষণিকভাবে অমূলক মনে হয়। কেননা, কবি-সরকার রাধা-কৃষ্ণের স্বরূপ ব্যাখ্যার প্রয়োজনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত কাব্য থেকে বাণী-বাক্য ধার করে বলে চলেন, ‘যখন তুমি আপনি ছিলে একা। আপনাকে তো হয় নি তোমার দেখা।’
কী সুন্দর কথা! ওই যে, নিজের শরীর নিজে স্পর্শ করে আনন্দ হচ্ছিল না—কবি যে এখানে সে কথাই বলছেন। আসলে কি জানেন, অন্যের স্পর্শ বড় মধুর লাগে, তা নারী হলে আরও মধুর লাগে। তাই তো ঋষিকবি রবীন্দ্রনাথের কথা, ‘যখন তুমি আপনি ছিলে একা। আপনাকে তো হয় নি তোমার দেখা। আমি এলাম, ভাঙল তোমার ঘুম, শূন্যে শূন্যে ফুটল আলোর আনন্দ-কুসুম। আমি এলাম, কাঁপল তোমার বুক। আমি এলাম, এল তোমার দুখ। আমি এলাম, এল তোমার আগুনভরা বসন্ত। আমার মুখ চেয়ে, আমার পরশ পেয়ে—যুগে যুগে আপন পরশ পেলে।’
‘আমি এলাম, তাই তো তুমি এলে।’ কী মধুর কথা! এই জন্য রাধা না এলে কৃষ্ণকে কেউ চিনত না।
স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, ১১ মার্চ ২০০৭ সালে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার জিকাবাড়ি গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় অনুষ্ঠিত কবিগানের আসর থেকে ধৃত কবি-সরকারের কথার মধ্যে রবীন্দ্রনাথের বলাকা কাব্যের ২৯ সংখ্যক কবিতাটি অনেকটাই পরিবর্তিত এবং সংক্ষিপ্ত হয়ে গেছে। আর এই পরিবর্তন এবং সংক্ষিপ্ত হয়ে ওঠা দৃষ্টান্তের ভেতর দিয়েই জনমানুষের কাছে রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর সৃজনকর্ম গৃহীত হওয়ার একটা জলজ্যান্ত ইতিহাস প্রত্যক্ষ করা গেল।
পরদিন ১২ মার্চ জিকাবাড়ি গ্রামের ভূপতি মোহন বালার ঘরে গ্রামীণ আসরে রবীন্দ্রনাথের কাব্য উপস্থাপনকারী কবি-সরকার নারায়ণচন্দ্র বালার একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করি। আমাদের প্রথম প্রশ্ন ছিল, ‘আমাদের একটা ধারণা ছিল যে, কবি-সরকাররা শুধু শাস্ত্রীয় গ্রন্থই পড়েন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে শাস্ত্রের সঙ্গে যুক্ত করেন কীভাবে?’
নারায়ণচন্দ্র বালা বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ তো শাস্ত্রের বাইরে নয়, তাঁর প্রতিটি কবিতার দুটো দিক। একটা সাধারণের জন্য, আরেকটা যারা অধ্যাত্মবাদী বা অধ্যাত্মচেতনা সমৃদ্ধ জীবন যাপন করে তাদের কবিগানের আসরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢুকে পড়েছেন ‘ঋষিকবি’ হিসেবে। দুটো-তিনটে দিক থাকে কবির কথায়। এর মধ্যে আধ্যাত্মিকতা তো আছেই।’
‘কিন্তু যে দর্শকদের সামনে রবীন্দ্রনাথকে উপস্থাপন করলেন সেই দর্শকদের অধিকাংশই দেখলাম গ্রামের সাধারণ মানুষ।’
নারায়ণচন্দ্র বালা বলেন, ‘আপনি ভাবছেন, তারা হয়তো বুঝে উঠতে পারছে না। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে—অনুভূতি আর অনুমিতি দুটো জিনিস আছে। এই বিবেচনা মাথায় রেখেই আমরা রবীন্দ্রনাথকে আসরে হাজির করি, দুর্বোধ্য জায়গাটা সহজ করে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। তখন মানুষের ভালো লেগে যায়। গতবার ওই কচুয়া থানায় (বাগেরহাট) দুই পালা গান এক জায়গায় হয়েছিল। সেখানে অন্তত বিশজন উকিল ছিল। গানের শেষে এক উকিল এসে আমাকে বলেন—“নারায়ণ কাকু, আপনি যে ভাবভাষা ব্যবহার করেন, তা এই কবিগান যারা শুনতি আসে এরা কি বোঝে? আপনি বলেন কেন? আপনার ব্যর্থ চেষ্টা”।’
‘আমি উনাকে জবাব দিয়েছিলাম—কাকাবাবু, কথা ঠিকই বলেছেন, আমি তো মানুষকে শোনাই না, আমি নিজে শুনি। আমার যদি ভালো লাগে, আমার যদি পরানে বেদনা আসে, তাহলে কে শুনল না-শুনল তাতে কিছু যায়-আসে না। উনি বললেন, “আমার উত্তর পেয়ে গেছি”।’
এ পর্যায়ে আমরা নারায়ণচন্দ্র বালাকে বলি, ‘আপনাদের ওপর রবীন্দ্রনাথের সাংগীতিক প্রভাবটাই বেশি। আসরে দেখা যায়, আপনারা রবীন্দ্রনাথের গীতবিতান-এর গানগুলো ব্যবহার করেন এবং রবীন্দ্রনাথকে ঋষিকবি বলেন। এসবের ভেতর দিয়ে আমাদের বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না যে, আপনারা রবীন্দ্রনাথকে নিজের মতো করে গ্রহণ করেছেন। কিন্তু আমাদের খুব জানতে ইচ্ছে করে, আপনার নিজের জীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে আত্তীকরণের সূচনা হয়েছিল কবে এবং কীভাবে?’
প্রত্যুত্তরে নারায়ণচন্দ্র বালা বলেন, ‘আমি ক্লাস নাইনে পড়ার সময় উনার গীতাঞ্জলিটা দেখেছিলাম। আমি তখন সব বুঝতামও না ভালো। আমার বাড়ির পাশে এক ভদ্রলোক ছিলেন। তিনি আমাকে বুঝিয়ে দিতেন। যখন আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গিতে গানগুলো বলতেন তখন খুব আপ্লুত হতাম এবং প্রবল ইচ্ছা জাগত যে, আমি রবীন্দ্রনাথের সব পড়ব। কিন্তু এটা তো বাতুলতা। উনি এক জীবনে যা লিখেছেন, একটা মানুষ বোধহয় এক জীবনে তা পড়ে শেষ করতে পারবে না। কিন্তু গীতাঞ্জলি আমি অনেকবার পড়েছি। তার সাথে গীতবিতান। তা…ওই গানটি আমার এত সুন্দর লাগে যে, প্রতিটি গানে একটা আধ্যাত্মিক চেতনা জড়িত। আর যদি অন্যভাবেও ব্যাখ্যা করে কেউ, তাও হতে পারে, সবার মনের সাথে যেন মিলে যায়, কিন্তু আমার বিরহব্যঞ্জনা থেকে ওই আধ্যাত্মিক চেতনা বেশি ভালো লাগে। উনার গানের মধ্যে তা আমি দেখতে পাই—এটা হয়তো আমার ভুলও হতে পারে দেখা, কিন্তু আমার সেভাবেই মনটা গড়েছে, উনার উপর (রবীন্দ্রনাথের গানের আধ্যাত্মিক চেতনার উপর) দারুণ আকৃষ্ট আমি। যিনি আমাকে প্রথম রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি বুঝিয়েছিলেন উনার নাম ছিল মুকুন্দবিহারি বাওয়ালী। উনার পরিচয়? উনি একজন সাধারণ মানুষ, অল্প লেখাপড়া জানতেন, কিন্তু আধ্যাত্মিক চিন্তায় সমন্বিত মানুষ। উনি আমাকে বোঝাতেন এবং নির্ভুল তথ্য দিতেন। খুব চিন্তাশীল ব্যক্তিত্ব ছিলেন।’
আমরা প্রশ্ন করি, ‘আপনারা তো রবীন্দ্রনাথ, লালন, বিজয় এঁদের গীত-বাণী ব্যবহার করেন। এঁদের মধ্যে কি কোনো সাদৃশ্য আছে?’
নারায়ণচন্দ্র বালা বলেন, ‘পার্থক্য, সাদৃশ্য সবই আছে। তবে তার মধ্যে আছে প্রকাশের বা ব্যঞ্জনার যে সৃষ্টিশৈলী তা তো সবার এক রকমের না। যিনি যতটা আধ্যাত্মিক চেতনায় সমন্বত, তার প্রকাশটা তত সুন্দর।…রবীন্দ্রনাথকে আপনারা রোমান্টিক মাধুর্য দিয়ে বিবেচনা করেন, ঠিক আছে, কিন্তু যখন আমি তাঁর গানে শুনতে পাই “দাঁড়িয়ে আছো তুমি আমার গানের ওপারে/আমার সুরগুলি পায় চরণ, আমি পাই নে তোমারে”—এ যে কত বড় কথা, একবার ভেবে দেখেন—“আমার সুরগুলি পায় চরণ, আমি পাই নে তোমারে”। এইখানে এসে যে আমি আর স্থির থাকতে পারি না। আমার চোখ ভেঙে জল চলে আসে। “আমি পাই নে তোমারে…”।’
নারায়ণচন্দ্র বালা এখানে এসে তাঁর কথা আর শেষ করতে পারেন না। আমরা লক্ষ করি, তাঁর দুই চোখ ভেঙে জলের স্রোতধারা বেয়ে পড়ছে। আর তিনি হু হু করে কেঁদে চলেছেন।
নারায়ণচন্দ্র বালার এই কান্নার সঙ্গে মুহূর্তের মধ্যে আমরা মিল খুঁজে পাই কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার নোয়াবাদ-জাফরাবাদ গ্রামের রামমঙ্গলের গায়ক-পালাকার গোপালচন্দ্র মোদকের কান্নার। একদিন তিনি তাঁর রামমঙ্গলের আসর শেষে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’ গেয়ে উঠলেন। কিন্তু গানের সুর-বাণীর মধ্যে যখন তিনি ‘মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি নয়ন জলে ভাসি’র স্থানে পৌঁছালেন, তখন তিনি ‘হায় হায়’ করে বেদনায় মুষড়ে গিয়ে সত্যি সত্যি ‘নয়ন জলে’ ভেসে গেলেন। সেই ছোটবেলা থেকে শুরু করে স্কুলজীবনে ক্লাস শুরুর আগে প্রায় প্রতিদিন একবার করে গেয়েছি এই জাতীয় সংগীত, এখনো বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে বা প্রয়োজনীয় স্থানে কমবেশি গেয়ে থাকি, কিন্তু ‘মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি নয়ন জলে ভাসি’র স্থানে এসে তো কোনো দিন কেঁদে ওঠার প্রয়োজন বোধ করিনি, বা সেই কেঁদে ওঠার অনুভূতিটাও কোনো দিন আমাদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়নি। কিন্তু কেন হয়নি? রামমঙ্গলের আসরে বসে নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলি। আরে তাই তো—মাতৃসম দেশ বন্দনার এই গানটির মর্ম না বুঝেই তো আমরা এত দিন তোতাপাখির মতো গেয়ে চলেছি। অথচ এর মর্মবস্তু বুঝলে—আমাদেরও তো গোপালচন্দ্র মোদকের মতো কান্না করার কথা এবং প্রকৃত দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ার কথা। আমাদের দেশমাতৃকার বদন আজ শুধু মলিন নয়, বহুবিধ রাজনৈতিক, ধর্মীয় টানাপোড়েন এবং নয়া উপনিবেশবাদী চক্রান্তে বিপন্ন বটে, কিন্তু কোনো বঙ্গমায়ের সন্তানকে তো দেশমাতৃকার এই বিপন্নতার মধ্যে গোপালচন্দ্র মোদকের মতো কাঁদতে দেখছি না। তবে কি আমরা গোপালচন্দ্র মোদকের মতো আমাদের বৃহত্তর জাতিগত জীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকৃত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’ গানের বাণীকে প্রকৃত অর্থে গ্রহণ করে নিতে পারিনি? ভেবে অবাক হই, জনমানুষের কাছে কত সহজেই না রবীন্দ্রনাথের গানের বাণীর গভীরতা অনুভূত হয়!
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ০১, ২০১১
Leave a Reply