১.
নির্জনতা নেই এখানে
পর্যটকের জটলা,
সুউচ্চ পাথুরে পাহাড়ের
মাঝখানে সমতল।
পণ্যপসরা সাজানো
দোকানপাট, রেস্তোরাঁ—
সুগন্ধি খাবার
কলকোলাহল।
গিরিখাতে নদী বয়ে যায়
শীর্ণকায়, ছলছল কলকল।
হঠাৎ জাগেন পাহাড়ের ঢালে
সৌম্য শান্ত গৌতম—
নিমীলিত নেত্রে সমাসীন।
বাম হাতের তর্জনী
ও কনিষ্ঠা ঈষৎ উত্তোলিত।
শান্তি কামনায় উচ্চারিত
ওষ্ঠ। প্রজ্জ্বলিত মোমবাতি
দানবাক্সে ইচ্ছাপূরণের
রজত মুদ্রা। জোড়হস্তে
দণ্ডায়মান পুণ্যার্থী।
অস্ফুট উচ্চারণ, শুধু
ঘণ্টাধ্বনি থেকে থেকে
প্রতিধ্বনিত কর্ণকুহরে।
প্রকৃতির কোলে পাহাড় ঢালে
গৌতমের ধ্যানমগ্ন আশ্রয়স্থান
নাম সোরাকসান।
২.
মায়াময়ী নদী হান। দু’তীরেই শহর
সমতল ও পাহাড় মিলিয়ে
উঁচু হর্ম্যরাজি। প্রায়
আকাশছোঁয়া। সমতলে দাঁড়িয়ে
লালছাদ ঘোলাটে সবুজে
উঁকি দেয় বারবার।
তীর ঘেঁষে রাস্তা,
যানবাহনের সশব্দ চলাচল।
উড়ালসেতুর নিচে
নানামুখী পথ।
দুপাশে ডালপালা ছড়ানো
সারি সারি গাছ।
শীত যাই যাই, কিছু গাছে
ফুলের উঁকি। ফুটপাতে নকশি কাটা
ফুলের বাগান।
হলুদ, লাল, নীল, বেগুনি, সবুজ।
দ্রুত হেঁটে চলে সুবেশা তরুণী
নদীর দুধারে হাত ধরাধরি
অসংখ্য সেতু। নানান নকশায়
আবৃত নানান রঙে।
মাথার ওপর ঝিকিঝিকি
ট্রেন চলে যায়। পত্রহীন গাছ
গুনতে গুনতে এগিয়ে চলি।
হঠাৎ হলুদের সমারোহ। উজ্জ্বল উচ্ছল
রং ছড়ানো যৌবনের ঢল।
সবকিছু ধোয়ামোছা
সড়ক, সেতু, গাছপালা, ঘরবাড়ি, যানবাহন,
দোকানপাট, নিয়নবাতি, ফুটপাতে
বসানো ভাস্কর্য, পাথরে, ধাতুতে।
প্রকৃতির অকৃপণ দানে উজ্জ্বল
মানুষের ছোঁয়ায় উচ্ছল
রাজধানী সিউল।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০৩, ২০১১
Leave a Reply