কারে আজ শুধাই সে কথা।
কি সাধনে পাব তারে যে আমার জীবন-দাতা।।
শুনিতে পাই ধার্মিক সবে
ইল্লিনে সিজ্জিনে যাবে
উভয় সব কয়েদী রবে
অচল-প্রাপ্ত কে ক্ষমতা।।
ইল্লিন সিজ্জিন দঃখ-সখের ঠাঁই
কোনখানেতে রেখেছেন সাঁই
হেথা কেন দুঃখ-সুখ পাই
কোথাকার ভোগ ভুগী কোথা।।
যখনকার পাপ তখন ভুগি
শিশু তবে হয় কেন রোগী
লালন বলে, বোঝ দেখি
কখন শিশুর গোনা-খাতা।।
——————
২৭০. লালন ফকির : কবি ও কাব্য, পৃ. ১৮৬
গানটি নানা গ্রন্থে স্থান পেয়েছে। সর্বত্রই কিছু কিছু পাঠভেদ আছে। ‘লালন-গীতিকা’য় অন্তরার ৩য়
চরণ – “উভয় সব কয় আধ রবে।” (পৃ. ১৬০); বস্তুত এটি ভুল পাঠ। ‘বাউল কবি লালন শাহ’ গ্রন্থে অন্তরা এভাবে আছে :
শুনতে পাই ধাৰ্মিক সবে
ইল্লিন ও সিজ্জিনে রবে
হেথায় জান সব কয়েদে রবে
অটল-প্রাপ্তির কোন ক্ষমতা।। – পৃ. ২৯৪
‘বাংলার বাউল ও বাউল গানে’ অন্তরার ২য় ও ৩য় চরণ “ইল্লিন-মঞ্জিলে যাবে/সবাই কয় মহাসুখে রবে” রূপে লেখা হয়েছে। (পৃ. ৮০) ‘ইল্লিল-মঞ্জিল’ পাঠ শুদ্ধ নয়। আরবি ভাষা-জ্ঞান না থাকায় এরূপটি হয়েছে। রোজ কেয়ামত বা শেষ বিচারের দিন বিচারের পর বেহেস্তে যাওয়ার পূর্বে পুণ্যাত্মাদের অবস্থান স্থান ইল্লিন এবং বিচারের পূর্বে পাপাত্মাদের অবস্থানের স্থান সিজ্জিন। এই গ্রন্থে আভোগ স্তবকটি আরও পরিবর্তিত হয়েছে।
যখনকার পাপ তখন ভূগি
শান্ত তবে হয় কেন রোগী
লালন বলে, বোঝ দেখি
কেন শিয়রে গোনার খাতা।। – পৃ ৮০
‘হারামণি’ ৫ম খণ্ডে সঞ্চারীর ৪র্থ চরণ : “আমার জাতে মিশা কই ক্ষমতা।”-পৃষ্ঠা ৫
Leave a Reply