একদিন পরের কথা ভাবলি নারে।
পার হবি হীরের সাঁকো কেমন করে।।
এক দমের ভরসা নাই
কখন কি করবে রে ভাই
তখন কার দিবে দোহাই
কারাগারে।।
বিনা কড়ির সদাই কেনা
মুখে সাঁইর নাম জপ না
তাতে কি আলস্যপনা
দেখি তারে।।
ভাসাও অনুরাগ-তরী
বসাও মুর্শিদ কাণ্ডারী
লালন কয়, সেই সে পাড়ি
যাবে সেরে।।
————-
লালন ফকির : কবি ও কাব্য, পৃ. ১৩৩-৩৪
‘বাউল কবি লালন শাহ গ্রন্থে’ অন্তরা ও সঞ্চার স্থান-বদল হয়েছে। ধুয়ার ১ম চরণে ‘কথা’ স্থলে ভাবনা কথাস্তর আছে। স্তবকেও ভাষার ভিন্নতা আছে। যেমন–
সঞ্চারী-
বিনা কড়ির বেচাকেনা
মুখে আল্লার নাম জপ না
তাতে কি আলমপনা
দেখি তোরে।।
আভোগ-
অনুরাগে সাজাও তর
মুরশিদ কর কাণ্ডারী
লালন কয়, যার যার পাড়ি
যাও না সেরে।। – পৃষ্ঠা ১৬৪
বস্তুত স্তবকগুলোতে হস্তক্ষেপ হয়েছে। সাঁইর স্থলে আল্লার, আলস্যপনা স্থলে আলমপনা শব্দ দ্বারা ইসলামি ভাব আরোপ করা হয়েছে। মৌখিক ধারার সাহিত্যে এ ধরণের পরিবর্তন হয়ে থাকে। স্থান কাল-পাত্রের প্রভাবে এরূপটি হয়। ‘হারামণি’ ৭ম খণ্ডে গানটি আরও শিথিল রূপে সংকলিত হয়েছে। যথা-
সঞ্চারী-
দীন কড়ির সদাই বেনা
শুধু কেবল নাম জপ না
তাতে কেন অলসপনা –
দেখি তোরে।। – পৃ. ১১
Leave a Reply