ভক্তি না হইলে, ও মওলা, দীদার কি মেলে। মানুষ রূপে দীন দয়াময়, ও তারে চিন খেয়ালে।। একদিন খলিলের মেহমানি ছিল ও খোদে খোদা সেথায় এসেছিল কোন পীর পয়গম্বর না আসিল ও আইল ফকিরের ছলে।। এব্রাহিম খলিলউল্লা ছিল ও আমার মওলা তাহার মন বুঝিল আপনা পুত্র কোরবানি দিল মওলার মন পাবার আশায়।। ফকিররে জানিও যেমন মওলাকে জানিও তেমন আলেম পাইলে দরশন ফকির হালছে বেহালে।। হরদমে যে করে জিকির তাহাকে জানিও ফকির খোদে খোদা তাহার কালবে হাজির ফকির লালন তাই বলে।।
—————–
হারামণি, ৫ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১০৮-০৯
লালন হিন্দু ও মুসলমান ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে অনায়াসে বিচরণ করতে পারতেন। বাউলের গুহ্য সাধনতত্ত্বকে বাণী রূপ দেওয়ার জন্য সমকালের জীবন থেকে যেমন, তেমনি ইতিহাস-ঐতিহ্য থেকে উপমা, রূপক, সাদৃশ্য অলংকারাদির আশ্রয় নিতে হয়। লালন অতি দক্ষতার সাথে এই কাজটি করতে সক্ষম হয়েছেন। এই গানে মুসলিম ধর্মীয় ঐতিহ্যের ব্যবহার আছে। গানের মূল ভাব প্রথম চরণের ব্যক্ত হয়েছে – ‘ভক্তি না হইলে, ও মওলা, দীদার কি মেলে।’
Leave a Reply