ধন্য আশেকী জনায় এ দীন দুনিয়ায়।
আশেক জোরে গগণের চাঁদ
পাতালে নামায়।।
নাম জপে না, কাম করে না
শুদ্ধ দেল আশেক দেওয়ানা
তাইতে আমার সাঁই রব্বানা
মদত সদায়।।
সুঁইর ছিদ্রে চালায় হাতী
বিনা তেলে জ্বালায় বাতি
সদায় নিষ্ঠা রতি
ঠাঁই অঠাঁইয়ে রয়।।
আশেকের মাশুক নামাজ
যাতে রাজি সাঁই রে-নিয়াজ
লালন করে শৃগালের কাজ
দিয়া সিঙ্ঘের দায়।।
———
বাউল কবি লালন শাহ, পৃষ্ঠা ২৭৮
কথান্তর : ১
ধন্য রে আশিক জনা এ দীন দুনিয়ায়।
আশক জোরে গগনের চাঁদ
মাটিতে নামায়।।
সে সূচের ছিদ্রে চালায় হাতী
বিনা তেলে জ্বালায় বাতি
কখন হয় নেস্ত গতি
ঠাঁই ও অঠাঁই।।
নাম জপে না, কাম করে না
শুদ্ধ প্রেম আশেক দেওয়ানা
তাহারি হবে সাঁই রব্বানা
মদদ সদায়।।
আশকের মাশুকী নামাজ
যাতে খুশি হন বে-নিয়াজ
লালন করে শিয়ালের কাজ
দিয়া সিংহের দায়।।
–হারামণি, ৭ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪
‘হারামণি’ ২য় খণ্ডে ধূয়ার ২য় চরণ নেই। সঞ্চারী ও আভোগে পাঠভেদ আছে:
সূঁই ছিদ্রে চালায় হাতি
বিনা তেলে জ্বালায় বাতি
কখন হয় নিষ্ঠা রতি
স্থায়ী অস্থায়ীতে রয়।।
আশকীর হজ নামাজ
তাতে রাজি হয় বে-নিয়াজ
ফকির লালন করে শেরেকের কাজ
দিয়া হিন্দুর দায়।।– পৃষ্ঠা ৭৯
ভনিতার পাঠটি লক্ষণীয়; রূপকের আবরণটি এখানে উন্মোচিত হয়েছে।
ধন্য আশকী জনা এ দীন দুনিয়ায়।
আশীক জোরে গগনের চাঁদ
পাতালে নামায়।।
সেই সিদ্দিরে চালায় হাতী
বিনে তেলে জ্বালায় বাতি
আশকে বলিস আল্লা
আবার তাও হয়েছে।।
মাশুকের যে হয় আশকী
খুলে যায় তার দিব্য আঁখি
নফস আল্লা নফস নবী
দেখবি অনায়াসে
মুরশিদের হুকুম মান
দায়েমী নামাজ মান
রসুলেরর যে ফরমান
লালন তাই রচে।।–লালন গীতিকা, পৃষ্ঠা ১৮১
বস্তুত এ পাঠটি ত্রুটিপূর্ণ। ধুয়ার সঙ্গে অন্য স্তবকের অন্তমিল রক্ষিত হয়নি। এ ছাড়াও সঞ্চারী ও আভোগ স্তবক দুটি ভিন্ন ভাবের। মূল ভাবের সাথে কোন মিল নেই। সম্ভবত তা প্রক্ষিপ্ত। সম্পাদক এ সম্পর্কে কোন মন্তব্য করেন নি।
Leave a Reply