ঐ এক অজান মানুষ ফিরছে দেশে, তারে চিনতে হয়।
তারে চিনতে হয়, তারে মানতে হয়৷
শরিয়তের মোনাজাতে
জানে না তা শরিয়তে;
জানা যাবে মারিফতে
যদি মনের বিকার যায়।
মূল ছাড়া এক আজগবি ফুল
ফুটেছে সে ভব-নদীর কূল;
চিরদিন এক রসিক বুলবুল
সে ফুলের মধু খায়।।
শুনেছি সেই মানুষের খবর
আলেফের জের, মিমের জবর
লালন বলে, হ’সনে ফাঁফর
মুরশিদ ধরলে জানা যায়।।
————-
লালন ফকির : কবি ও কাব্য, পৃ. ১৬৪-৬৫
‘লালন-গীতিকা’য় সঞ্চারীর ১ম চরণে ‘এক’ স্থলে ‘সে’, ৪র্থ চরণে ‘ফুলের’ স্থলে ‘ফুলেতে’ এবং ভনিতার শেষ চরণে ‘ধরলে’ স্থলে ‘ভজলে’ কথান্তর আছে।
‘হারামণি’, ৫ম ও ৭ম খণ্ডে গানটি সংকলিত হয়েছে। এখানে শব্দ ও পদগুচ্ছে পাঠভেদ আছে। গানটি উদ্ধৃত হল :
এক অজান মানুষ ফিরছে দেশে
তারে চিনতে হয়।
শরিয়তের বিনা জাতে
পাবে না তা শরিয়তে
জানা যাবে মারুফাতে
যদি মনের বিকার যায়।
গাছ ছাড়া সেই আজগুবি ফুল
ভেসে বেড়ায় প্রেম নদীর কূল
শ্বেত বরণ এক ভ্রমর বুলবুল
সেই ফুলেরি মধু খায়।
কি কব সেই মানুষের খবর
আলেফে মিম, মিমে যবর
লালন বলে, হৈস না ফাঁফর
মুরশিদ ধরে জানতে হয়।।– ৫ম খণ্ড, পৃ. ১০১-০২; ৭ম খণ্ড, পৃ. ৩৮৫
‘বাউল কবি লালন শাহ’ গ্রন্থে অন্তরার ১ম চরণ ‘শরিয়তের বুনিয়াদে/পাবে না তা কোন মতে’ রূপে সংকলিত হয়েছে।– পৃ. ৩৮৫
Leave a Reply