অবশেষে প্রকাশিত হলো অটোবায়োগ্রাফি অব মার্ক টোয়েন, প্রথম খণ্ড। গত ২১ নভেম্বর ২০১০ দি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় এই বইয়ের আলোচনা লিখেছেন জোনাথন বেট
বিশ শতকের গোড়ার দিকে মার্ক টোয়েনের জীবন যখন নিভু-নিভু, তিনি হঠাৎ ডিকটেশনের অপার আনন্দ আবিষ্কার করে ফেললেন। তিনি একটা লম্বা সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে তাঁর নিউ ইয়র্কের ফ্ল্যাটজুড়ে পায়চারি করতেন, আর তাঁর নারী স্টেনোগ্রাফার, আর আলবার্ট বিগলো পাইন নামে একটা লোক, যাকে তিনি নিজের জীবনী লেখার কাজে নিয়োগ দিয়েছিলেন—এই দুজনকে উঁচু গলায় ডিকটেশন দিতে থাকতেন। তাঁর একটি শর্ত ছিল, তিনি মারা যাওয়ার অন্তত ১০০ বছর পেরোনোর আগে এই বই কিছুতেই ছাপা যাবে না। তিনি তাঁর স্টেনো ইসাবেল লিয়নকে ডিকটেট করার সময় বলছেন, ‘আমাকে অবশ্যই এ কথাটা মনে রাখতে হবে যে আমি কবর থেকে কথা বলছি। কারণ এই বই যখন প্রেস থেকে ছেপে বেরোবে তখন আমি মরে ভূত।’
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস যে মস্ত এক দান হাতে পেয়ে গেছে তাতে আর কেউ সন্দেহ করবে না। ১০০ বছরে এই প্রথমবারের মতো আমেরিকান সাহিত্যের জনকের অপ্রকাশিত গোটা আত্মজীবনী! এই বইয়ে নিশ্চয়ই এমন সব স্ক্যান্ডাল বেরিয়ে আসবে, যা এতকাল চাপা ছিল। তাঁর যৌনজীবন নিয়ে কোনো গোপন কথা, বর্ণবাদ বিষয়ে তাঁর কুঁদুলে কথাবার্তা, যেসব মন্তব্যের জন্য হাকলবেরি ফিন নিষিদ্ধ হয়েছিল—একবার কালোদের প্রতি সহানুভূতির অপরাধে, আর একবার কালো-বিদ্বেষী হওয়ার দোষে।
এই ‘সম্পূর্ণ’ বইটিতে তেমন ধাক্কা দেওয়ার মতো নতুন কিছু নেই, যা বই ছাপা হতে ১০০ বছরের বিলম্বকে ন্যায্য করতে পারে। বইয়ের সম্পাদনার কাজ অসাধারণ হয়েছে। টোয়েনের বিশৃঙ্খল পাণ্ডুলিপিটি সাজানো হয়েছে অত্যন্ত প্রতিভাদীপ্ত উপায়ে। বইটিকে একেবারে ঢেলে সাজানো হয়েছে, এ রকম সংস্করণকে আমরা বলি জেনেটিক এডিশন। লম্বা এক ভূমিকা শেষ হওয়ার পর টোয়েনের ১৫০ পৃষ্ঠার পাণ্ডুলিপি ছাপানো হয়েছে। এটা অবশ্য বইয়ের প্রথম খণ্ড, আরও দুই খণ্ড পরে বেরোবে। (সংক্ষেপিত)
অনুবাদ: তৈমুর রেজা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ০৭, ২০১০
Leave a Reply