গজেন ঘোষের আড্ডায়
দাদাঠাকুর শরৎচন্দ্ৰ পণ্ডিত যখন কলকাতার বাগমারিতে এসেছেন, তখন বিদূষকপত্রিকাটি তিনি নিজেই শহরের ফুটপাতে দাঁড়িয়ে বা রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতেন। এই পয়সায় তিনি সংসার চালাতেন। সারাদিন পত্রিকা বিক্রির পর বিকেলে যেতেন নির্মলচন্দ্রের বাড়িতে বৈকালিক জলযোগ সারতে, তারপর আবার কাগজ বিক্রি। সন্ধ্যায় যেতেন আটত্রিশ নং কর্ণওয়ালিস স্ট্রিটে গজেন্দ্ৰচন্দ্ৰ ঘোষের বৈঠকখানায় গজেনদার আডজয়। সেই আড্ডার আসরে আসতেন। সেই সময়ের অনেক বিখ্যাত সাহিত্যিক। দাদাঠাকুর গজেন ঘোষের স্ত্রীকে বিদূষক পত্রিকা বিক্রির খুচরো পয়সাগুলি দিতেন, তার বদলে নিতেন টাকা আদুলি সিকি। গজেন ঘোষের স্ত্রী নিয়মিত দাদাঠাকুরকে লুচি তরকারি মিষ্টি, চা ইত্যাদি যত্ন করে খাওয়াতেন। পেট ভর্তি থাকলে দাদাঠাকুর শুধুচা খেতেন। কিন্তু যেদিন খুব খিদে পেত সেদিন আহ্বাদে আটখানা, আহ্বাদে আটখানা বলে গান গাইতে গাইতে ঢুকতেন। আসরের কেউ ব্যাপারটা না বুঝলেও গজেন ঘোষের স্ত্রী ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারতেন যে আজ দাদাঠাকুর আটখানা লুচি চাইছেন! তিনি তখন সেই মত খাবার পরিবেশন করে খাওয়াতেন। দাদাঠাকুরকে। পেট ভরে খাওয়া দাওয়া সেরে ঢেকুর তুলতে তুলতে আসরে এসে বসতেন। দাদাঠাকুর। তারপর বেশ কিছুক্ষণ রঙ্গ রসিকতায় মাতিয়ে তুলতেন সকলকে।
গৃহকর্তা গজেন ঘোষ দাদাঠাকুরকে বিশেষ পছন্দ করতেন।
Leave a Reply