দুটাকায় বন্ধু বিচ্ছেদ
শরৎচন্দ্র একবার দিল্লি কংগ্রেসে যোগ দিতে যান। ফেরার পথে দিল্লি থেকে যান। বৃন্দাবনে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন। কাশীর উত্তরা পত্রিকার সম্পাদক সুরেশচন্দ্র চক্রবর্তী ও দিলীপকুমার রায়। দুজনকেই শরৎচন্দ্ৰ বিশেষ পছন্দ করতেন। শরৎচন্দ্রের মেজভাই প্রভাসচন্দ্ৰ যৌবনেই যোগ দেন রামকৃষ্ণ মিশনে। সন্ন্যাসী হবার পর তাঁর নাম হয় স্বামী বেদানন্দ। তিনি ঐ সময় বৃন্দাবনে রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ ছিলেন। শরৎচন্দ্ৰ ওঠেন তাঁর মেজ ভাইয়ের আশ্রমে। সঙ্গে দুজন সঙ্গী। তারা একদিন বৃন্দাবনে রাধাকুণ্ড তীর্থস্থান দেখতে যান। তিনজন পাণ্ডা তাদের কুণ্ড দেখিয়ে ফেরার সময় তাঁদের টাঙ্গা ঘিরে এক আনা দিজিয়ে, দু আনা দিজিয়ে, তিন আনা দিজিয়ে বলে বিরক্ত করতে লাগল।
দিলীপকুমার ও সুরেশচন্দ্ৰ ঠিক করতে পারলেন না পাণ্ডাদের কত দেওয়া যায়। তখন শরৎচন্দ্ৰ পকেট থেকে দ্য টাকা বের করে ছুড়ে দিলেন। কারো হাতে দিলেন না। পাণ্ডারা তখন ঐ টাকা নেবার জন্য হুড়োহুড়ি ফেলে দিল। আরোহীরা এই সুযোগে টাঙ্গ নিয়ে ছুটে চলল। দিলীপকুমার শরৎচন্দ্ৰকে বললেন, একটু সময়ের কুণ্ড দেখানোর জন্য ওদের দুটিাকা দিয়ে দিলেন?
শরৎচন্দ্ৰ উত্তরে হেসে বললেন, ঐ টাকা নিয়ে ওরা হাঙ্গামা বাঁধিয়ে দিয়েছে। চিরকালের মত ওদের মধ্যে বন্ধু বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দিলুম।
শরৎচন্দ্রের কথা শুনে দিলীপকুমার ও সুরেশচন্দ্ৰ হেসে উঠলেন। টাঙ্গা ছুটে চলল বৃন্দাবনের পথে।
Leave a Reply