ভেলু
ভেলু নামের একটি কুকুর ছিল শরৎচন্দ্রের। কুকুরটি ছিল তার খুব প্রিয়, খুব অনুগত। একদিন কুকুরটিকে নিয়ে শরৎচন্দ্ৰ খেলা করছিলেন, এমন সময় এক বৈষ্ণব এলেন তার সঙ্গে দেখা করতে। বৈষ্ণবটি শরৎচন্দ্রের সঙ্গে জীবপ্ৰেম, বৈষ্ণবধর্ম, অহিংসা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এই সময় ভেলু নামে কুকুরটি বৈষ্ণবের নীচে নামিয়ে রাখা ঝোলা থেকে জপমালাটা বের করে মুখে পুরে নিয়েছে। তা দেখে ক্ষেপে উঠলেন। বৈষ্ণব। দু চোখ তার লাল হয়ে উঠল। তিনি চিৎকার চেঁচামেচি করতে করতে কুকুরের মুখ থেকে জপমালাটা কেড়ে নিলেন। বৈষ্ণবের এহেন আচরণে অসন্তুষ্ট হলেন শরৎচন্দ্ৰ। তাঁর প্রিয় কুকুরের প্রতি বৈষ্ণবের ক্ষোভ প্রকাশ দেখে তিনি চুপ থাকতে পারলেন না। হেসে হেসে তিনি বৈষ্ণবকে ব্যঙ্গ করে বললেন, সে কী গোসাঁইবাবা, আপনার জীবপ্ৰেম দেখছি এখনও কুকুর পর্যন্ত এসে পৌঁছয়নি!
শরৎচন্দ্রের এই কথায় লজ্জা পেয়ে বৈষ্ণবটি চলে গেলেন।
এই ভেলু কুকুরের মৃত্যুর পর শরৎচন্দ্ৰ খুব কষ্ট পান। ঘটা করে তার শ্ৰাদ্ধকরেন। শরৎচন্দ্রের ভক্ত অবিনাশ ঘোষাল তার বাতায়ন পত্রিকায় ভেলুর মৃত্যুসংবাদ প্রকাশ করেছিলেন মূলত শরৎচন্দ্রকে খুশি করার জন্য। সমসাময়িক আর একটি বিখ্যাত পত্রিকা শনিবারের চিঠি-এর সম্পাদক সজনীকান্ত দাশ তার পত্রিকায় ছড়া করে লেখেন
ভেলুর নেই বিনাশ।
ভেলু হল অবিনাশ।।
ভেলুর সঙ্গে শরৎচন্দ্রের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে ছিল।
Leave a Reply