গল্পের বাড়ি গল্পের পুকুর
শুধু নিজেই লিখতেন না, শরৎচন্দ্ৰ অন্যদের লেখার ব্যাপারে উৎসাহ দিতেন। তরুণ সাহিত্যিকরা অনেকেই তার কাছে আসতেন পরামর্শের জন্য। একদিন শরৎচন্দ্রের বাল্যবয়সের এক বন্ধু শরৎচন্দ্রের কাছে একটি গল্প লিখে নিয়ে এসেছেন। শরৎচন্দ্ৰ গল্পটি মন দিয়ে পড়লেন। একটা বাড়ির রঙ বদলানোর কথা আছে গল্পের শেষে। গল্প পড়া শেষ করে শরৎচন্দ্র বললেন, গল্পটা মন্দ হয় নি বন্ধু, তবে আমি হলে গল্পের শেষটা একটু বদলে দিতুম।
কী বদলাতিস গল্পের শেষে?-বন্ধুর প্রশ্ন।
শরৎচন্দ্র বললেন, দ্যাখ, আমি হলে শুধু রঙ না বদলে সমস্ত বাড়িটা ধুলিসাৎ করে দিতুম। শুধু তাই নয়, কুলিমজুর লাগিয়ে জমির ভিত খুঁড়ে জমির মাটি কেটে, একটা বড় পুকুর তৈরী করে তার মাঝে শ্বেত পাথরের একটা ঘাট বানিয়ে দিতুম।
অবাক বন্ধুটি বললেন, সে কী রে, অতবড় একটা বাড়ি, সেটাকে ভেঙেচুরে পুকুর তৈরী করতিস? সেটা হয় নাকি?
শরৎচন্দ্ৰ এবার হাসতে হাসতে বললেন, কেন হবে না বন্ধু, ওই বাড়ি তো তোরও নয়, আমারও নয়। জমিও তোর নয়, আমারও নয়। আমাদের হাতে যখন কলম আছেই তখন সেই কলমের এক খোঁচায় বাড়ি ভাঙতে কতক্ষণ লাগবে? পুকুর কেটে ঘাট তৈরী করতেই বা কতক্ষন লাগবে? কী রে, বল কিছু?
বন্ধুটি হেসে বললেন, তা বটে!
Leave a Reply