দীর্ঘ গুম্ফযুক্ত
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারমাইকেল অধ্যাপক দেবদত্ত ভাণ্ডারকর একদিন সকলের সামনে হাসতে হাসতে বললেন, জানেন, তক্ষশীলা নগরে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ডিরেকটির জেনারেল একখানি নতুন রাজতপত্র আবিষ্কার করেছেন। প্রত্নতত্ত্ব-বিভাগের শিলালিপিপাঠক তা পাঠ করে বলেন–এটা পুরানের অংশ। ওতে যে ঘটনাটি লেখা আছে তা হল–
একদা রম্ভা, উর্বশী বা মেনকা ইন্দ্রের সভায় নাচ করছিলেন। সেই সভায় দুৰ্ব্বাসা ও সরস্বতী উপস্থিত ছিলেন। যে অপ্সরা নৃত্য করছিলেন, তাঁর নৃত্যের কিঞ্চিৎ দোষ ঘটায় সরস্বতী তাই দেখে অবজ্ঞায় হেসেছিলেন। তা দেখে দুৰ্ব্বাসা ক্রুদ্ধ হয়ে সরস্বতীকে শাপ দেন—তুই কলিযুগে গঙ্গাতীরে ভবানীনগরে দীর্ঘগুম্ফযুক্ত হয়ে জন্মগ্রহণ করবি। অতএব কলিযুগে গঙ্গাতীরে ভবানীনগরে দীর্ঘ গুম্ফযুক্ত সরস্বতী উপাধিধারী যে পুরুষ কলকাতার বিদ্যাপীঠের সর্বাধিকারী তিনি কমলদলবাসিনী শুভ্ৰাভা দেবী বীনাপাণির পূর্ণ অবতার।
এই কাহিনীটি পড়ে স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। তার নিজস্ব মত প্ৰকাশ করেন–যে ঋষি শাপ দিয়েছিলেন তিনি দুর্বাসা নন, ভরদ্বাজ। অভিসম্পাৎ ছিল মর্ত্যলোকে জন্মগ্রহণ করা, কিন্তু সরস্বতী অভিশপ্ত হয়ে করুণ অনুনয় বিনয় করলে ঋষি তাকে বললেন-আচ্ছা, তোমাকে এই বর দিলুম যে অজ্ঞানপূর্ণামর্ত্যলোকে তুমি বিদ্যাবিস্তার করবে। দেবী প্রত্যুত্তরে বলেন-ঠাকুর, আমি স্ত্রী লোক, আমি তা কিরূপে সমর্থ হব? তখন ঋষিবর বলেন-তবে আমার বরে তুমি পুরুষ হবে ও আমারই বংশে জন্মগ্রহন করবে।
স্যার আশুতোষের এই মজার মন্তব্য শুনে সকলেই হেসে ওঠেন।
Leave a Reply