সংস্কৃত কবিতা
স্বামী বিবেকানন্দ তখন লণ্ডনে। সেই সময় দেশাই নামে এক গুজরাটী যুবক নিয়মিত তাঁর কাছে আসতেন। দেশাই সংস্কৃত কবিতা লিখতেন। সেই কবিতা তিনি শোনাতেন স্বামীজীকে।
প্রথম প্রথম স্বামীজী কিছু বলতেন না। চুপ করে শুনতেন সংস্কৃত কবিতাগুলি। কিছুদিন পর এক সকালে দেশাই এসেছেন। সঙ্গে সংস্কৃত কবিতা ভরা খাতা। স্বামীজীকে শোনাবেন—এই আশায়।
স্বামীজী দেশাইকে এবার হাসতে হাসতে বললেন, দেশাই এসেছে, বোসো। দেশাই বসেই খাতা খুলে সংস্কৃত কবিতা পড়তে শুরু করলেন। একটার পর একটা পড়ে যেতে লাগলেন। শেষমেষ বিবেকানন্দ বলে উঠলেন, ওহে এবার থামো-আর শোনো একটা কথা-সংস্কৃত কবিতা লেখার জন্য সাতসমুদ্র তের নদী পার হয়ে ভারতবর্ষ থেকে এই লণ্ডনে আসার কোনো দরকার ছিল না। ওতো বাড়িতে বসেই হতে পারতো। বরং যে কাজ করতে এসেছ এখানে, যাও মন দিয়ে সে কাজ করোগে। দেশাই বুঝলেন, কী কারণে স্বামীজী এই স্পষ্ট কথাগুলি বললেন। নিজের ভুল বুঝতে পেরে তিনি তখন খাতা গুটিয়ে নিয়ে স্বামীজীকে প্ৰণাম করে বললেন, আমার ভুল হয়ে গেছে, আর এরকম হবে না। যে কাজের জন্য আমি লণ্ডনে এসেছি। এবার থেকে মন দিয়ে শুধু সেই কাজটাই করবো।
খুশী হয়ে স্বামীজী দেশাইকে আশীর্বাদ করলেন।
আসলে কবিতা লেখাকে তিনি অপছন্দ করতেন না। কিন্তু যেখানে যেটা সেখানে সেটা যখন যেটা তখন সেটা করাকেই তিনি প্রধান কাজ বলে মনে করতেন।
Leave a Reply