লালু
রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে বিকেলবেলা যখন চা খেতেন, তখন একটা কুকুর রোজ তাঁর পায়ের কাছে এসে বসত। কবি তার পিঠে হাত বুলিয়ে দিতেন, আনন্দে লেজ নাড়ত কুকুরটা। রবীন্দ্রনাথ কুকুরটার নাম দিয়েছিলেন ‘লালু’। কারণ তার গায়ের রং ছিল। লাল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শরৎচন্দ্রের একটি কুকুর ছিল, তার নাম ‘ভেলু’। কবি চায়ের সঙ্গে মাখন পাউরুটি খেতেন এবং সেই খাবার প্রতিদিন লালুকে দিতেন। কবির ঘনিষ্ঠজনেরা বলাবলি করতেন, কবির মতই লালুরও খাবার ব্যাপারে সৌখিনতা দেখা যায়। এ কথা শুনে কবি মুচকি হাসতেন। কোনোদিন যদি পাউরুটিতে মাখন না লাগিয়ে লালুকে দেওয়া হত, সে মুখেই তুলত না খাবার। তাই কবি লালুর জন্য পাউরুটিতে মাখন ভর্তি করে লাগিয়ে দিতেন। মাঝে মাঝে কবির খাসভৃত্য বনমালী লালুকে মাখন পাউরুটি খেতে দিত। কিন্তু বনমালী পাউরুটিতে কম মাখন লাগিয়ে দিত বলে কুকুর সেই খাবার মুখে তুলত না। তাই দেখে কবি বনমালীকে ধমক দিতেন। বলতেন, ‘দেখেছিস কুকুরের কী ডিগনিটি? এমন ভদ্র কুকুর বড় একটা দেখা যায় না।’
কোনো দিন বিকেলে লালুর যদি আসতে একটু দেরী হয়ে যেত, সেদিন কবি অস্থির হয়ে উঠতেন। কবির এই কুকুরগ্ৰীতির কথা শান্তিনিকেতনের অনেকেই জানতেন।
Leave a Reply