কবি-সাহিত্যিক-সম্পাদক
নৈহাটিতে সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের সঙ্গে আলাপ করতে এসেছেন কবি নবীনচন্দ্ৰ সেন। সঙ্গে এসেছেন ‘সাধারণী’ পত্রিকার সম্পাদক অক্ষয় সরকার। বঙ্কিমচন্দ্রের অপেক্ষায় বৈঠকখানায় দুজন বসে। বঙ্কিমচন্দ্রের অগ্রজ সঞ্জীবচন্দ্র ঘরে বসে। এমন সময় একজন দিব্যাকান্তি সুপুরুষ হঠাৎ পিছন থেকে এসে নবীনচন্দ্ৰকে জড়িয়ে ধরলেন। তাঁর মুখে মৃদু হাসি। সঞ্জীবচন্দ্ৰ নবীনচন্দ্রকে জিগ্যেস করলেন, ‘লোকটা কে বলুন তো?’
নবীনচন্দ্ৰ প্ৰণাম করতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু প্ৰণাম করা হলো না। ভদ্রলোকটি নবীনচন্দ্রকে বুকে জড়িয়ে ধরে জিগ্যেস করলেন, বিলুন তো আমি কে?’
নবীনচন্দ্ৰ হেসে উত্তর দিলেন, ‘আপনি বঙ্কিমবাবু।’
বঙ্কিমচন্দ্র জিগ্যেস করলেন, ‘কী করে চিনলেন?’
নবীচন্দ্রের চটজলদি জবাব, ‘শিকারী বেড়ালের গোফ দেখলেই চেনা যায়।’
‘গোঁফের ওপর তাহলে আপনার নজর পড়েছে।’
নবীনচন্দ্ৰ হেসে বললেন, ‘পড়ার কথা নয় কি?’
দুই কবি-সাহিত্যিকের রসিকতা শুনে সম্পাদক অক্ষয় সরকার হেসে উঠলেন। অক্ষয় সরকার বঙ্কিমচন্দ্রের পূর্ব পরিচিত। বঙ্কিমচন্দ্র তীকে বিশেষ স্নেহ করতেন ও বয়ঃ কনিষ্ঠ অক্ষয়চন্দ্ৰকে নাতি বলে ডাকতেন। অক্ষয়চন্দ্ৰ সাধারণী’ ছাড়াও বঙ্কিমচন্দ্ৰ চট্টোপাধ্যায়ের রঙ্গ রসিকতা ‘নবজীবন’ নামে আর একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। বঙ্কিমচন্দ্ৰ সেই পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে ধর্মতত্ব বিষয়ে বহু প্ৰবন্ধ লেখেন।
বঙ্কিমচন্দ্র রসিকতা করে ‘সাধারণী’ পত্রিকার সম্পাদক অক্ষয়চন্দ্রের স্ত্রীর নাম দিয়েছিলেন ‘আসাধারণী’।
Leave a Reply