পচা ডিম
একদিন শান্তিনিকেতনের পাশের গ্রামের এক গৃহকর্তা নিমন্ত্রণ করলেন রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতনের শিক্ষকক্ষিতিমোহন সেনকে। দুই অতিথি খেতে বসেছেন। গৃহকর্তা খুটিনাটি বিষয়ে লক্ষ্য রাখছেন, অতিথিদের যাতে কোনো অসুবিধা না হয়। খাবার থালার পাশে সাজানো অনেক বাটি, তাতে বিভিন্ন পদের খাবার। তার মধ্যে একটিতে ছিল ডিমের কালিয়া। ডিমটি খেতে গিয়ে ক্ষিতিমোহন তাতে পচা গন্ধ পেলেন। তাই তিনি বাটিতে ডিমটি নামিয়ে রাখলেন এবং মনে ভাবলেন, গুরুদেব যা করবেন। তিনিও তাই করবেন। এই ভেবে তিনি রবীন্দ্রনাথের দিকে আড়াচোখে তাকালেন। তাকিয়ে কী দেখলেন ক্ষিতিমোহন? দেখলেন, রবীন্দ্রনাথ ঐ পচা ডিম পুরে দিলেন মুখে! এই দৃশ্য দেখে অবাক ক্ষিতিমোহন। একপ্রকার বাধ্য হয়েই চোখ বুঝে পচা ডিমটা মুখে পুরে দিলেন। ডিমটা খাওয়ার পর থেকেই তার শরীরটা কেমন করতে লাগল। ভোজনাস্তে আশ্রমে ফেরার পথে ক্ষিতিমোহন গুরুদেবকে জিগ্যেস করলেন, ‘এই পচা ডিম কী করে খেলেন, গুরুদেব? আমার তো খাওয়ার পরই বমি পেয়ে গিয়েছিল, এখনও গা গুলোচ্ছে!’
রবীন্দ্রনাথ এ কথা শুনে বললেন, ‘ডিমটা তুমি খেয়েছ নাকি? আমি তো খাইনি।’ এ কথা শুনে ক্ষিতিমোহন জিগ্যেস করলেন, ‘সে কী! আপনি খাননি? তবে যে দেখলাম, আপনি ডিমটা মুখে তুলছেন?’
এবার রবীন্দ্রনাথ হেসে বললেন, ‘তুমি কী ভাবছি, ওই ডিম আমি খেয়েছি? আসলে ডিমটা আমার দাড়ির ফাঁক দিয়ে একেবারে চাপকানের মধ্যে চালান করে দিয়েছি। এখন ওটাকে বের করতে পারলে বেঁচে যাই।’
গুরুদেবের মুখে এ কথা শুনে ক্ষিতিমোহন অবাক!
Leave a Reply