মাতৃদায়
সালটা উনিশশো পাঁচের কিছু আগে, রবীন্দ্রনাথ তখন রীতিমত ব্যস্ত বঙ্গ ভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে। লর্ড কার্জনের বঙ্গ ভঙ্গের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কবি তখন লিখছেন অনেক কবিতা, অনেক গান। দলবল নিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন সভা সমিতিতে। রাখিবন্ধন উৎসব করছেন। সদলবলে গান গেয়ে বেড়াচ্ছেন পথে পথে। ঠিক এই সময় রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ বন্ধু নাটোরের মহারাজা জগদীন্দ্ৰনাথ রায়ের কন্যার বিবাহের নিমন্ত্রণ এল। মহারাজা রবীন্দ্রনাথকে বিবাহের দিন সকাল সকাল আসতে বলেছেন। কিন্তু রবীন্দ্ৰনাথ কী করেন, চারদিকে সভা করে তিনি যখন বিয়েবাড়িতে পৌঁছলেন। তখন সন্ধে হয়ে গেছে। অতিথিদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন স্বয়ং মহারাজ।
রবীন্দ্রনাথকে আসতে দেখে তিনি বললেন, ‘আসুন আসুন, আমার কন্যাদায়, আপনি কোথায় সকাল সকাল আসবেন, তা না। এত দেরি করে এলেন!’
এ কথা শুনে কবি হাসলেন এবং বললেন, ‘তা ঠিক, আমার আরো আগে আসা উচিত ছিল। কিন্তু কী করব বলুন মহারাজ, আপনার যেমন কন্যাদায়, আমারও তেমন মাতৃদায়, এই দেখুন না, এখানে আসার আগেই দুটো জায়গায় সভা করে এলুম।’
একথা শুনে মহারাজা বললেন, ‘তাই নাকি? হ্যাঁ, ওটারও বিশেষ প্রয়োজন আছে। চলুন, ভেতরে চলুন।’
Leave a Reply