আহারে অভ্যাস বিরোধীতা
রবীন্দ্ৰনাথ কী ভাবে খেতেন? তাঁর থালার পাশে বাটিতে করে বিভিন্ন পদ সাজিয়ে দেওয়া হত। খেতে বসে তিনি এটা থেকে কিছুটা, ওটা থেকে কিছুটা তুলে খেতেন। না, কোনো প্রচলিত রীতি তিনি মানতেন না খাবার সময়। তাঁর এ এক অদ্ভুত বৈশিষ্ট। তার খাওয়া দেখে অনেকেই অবাক হতেন। বিশ্বভারতীর সেই সময়কার অধ্যাপক ও গ্ৰন্থসম্পাদক নন্দগোপাল সেনগুপ্ত একদিন এই প্রথাগত রীতি বিরোধী খাবারের কথা তুলে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের সামনেই বলে বসলেন, ‘গুরুদেব, আপনি কি জানেন, বিদ্যাসাগর মশায়েরও আহারের ব্যাপারে আপনার মত এইরকম অভ্যাস বিরোধিতা ছিল। তিনি আগে খেতেন দুধ, মিষ্টি, তারপরে খেতেন তেতো। এ কথা জেনেছি বিহারীলাল সরকারের বই পড়ে।‘
রবীন্দ্ৰনাথ এ কথা শুনে রসিকতা করে বললেন, ‘নন্দ, তুমি দেখছি প্রত্নতাত্ত্বিকদের পিসেমশাই। খুঁজে খুঁজে ঠিক বারও করেছে। এত তো জানতামই না। তুমি কোনদিন হয়তো আমার কথাও লিখে বসবে। তবে তাতে একটা সুবিধে হবে। কী সুবিধে জানো? লোকে বলবে-রবীন্দ্ৰনাথ আর বিদ্যাসাগরের অন্ততঃ একটি বিষয়ে মিল আছে আহারের সময় উভয়েরই বুদ্ধিাশুদ্ধি লোপ পেত।’
রবীন্দ্ৰনাথের এ কথা শুনে নন্দগোপাল হেসে উঠলেন। সেই সময় রবীন্দ্রনাথের খাসভৃত্য এসে বলল, ‘গুরুদেব, আসুন, খাবার বেড়েছি—।’
Leave a Reply