সাঁওতাল মেয়ে
একদিন রবীন্দ্ৰনাথ উত্তরায়ণের বারান্দার এক কোণে চেয়ার-টেবিলে বসে মগ্ন হয়ে কবিতা লিখছিলেন। বাগানে একটি সাঁওতাল মেয়ে সেই সময় ঘাস পরিস্কার করছিল। কাজ শেষ হলে বিকেলে মেয়েটি রবীন্দ্রনাথের পাশটিতে গিয়ে দাঁড়াল। মেয়েটিকে দেখে রবীন্দ্রনাথ লেখা থামিয়ে বললেন, ‘কী রে, কিছু বলবি?’
মেয়েটি এবার বলল, ‘হ্যাঁরে, তুর কি কুন কাজ নাই? সুকালবেলা যখন কাজে এলম, দেখলাম তুই এখানে বসে কী করছিস! দুপুরেও দেখলাম, এখানে বসে আছিস! এখন আবার সনঝেবেলা আমাদের ঘরকে যাবার সময় হয়েছে–এখনও তুই এখানে বসে আছিস! আচ্ছা, তুকে কি কেউ কুন কাজ দেয় নাই?’
মেয়েটির মুখে এই কথা শুনে রবীন্দ্ৰনাথ হেসে ফেললেন। ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের রবীন্দ্ৰনাথ নিজেই এই গল্পটা শুনিয়ে বলতেন, ‘দ্যাখো, সাঁওতাল মেয়েটার কী বুদ্ধি দ্যাখো! আমার স্বরূপটা ও ঠিক ধরে ফেলেছে।’
এ কথা শুনে সকলে হেসে উঠতেন।
Leave a Reply