বলিদান
ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগর তপন বিটন কলেজের সেক্রেটারি। অনেক উচ্চপদস্থ সাহেবও তখন কমিটির সদস্য। এক ফিরিঙ্গি ভদ্রমহিলা তখন প্রধান শিক্ষয়িত্রী ছিলেন । কোনো বিশেষ কারণে ঐ ভদ্রমহিলা কলেজের এক পণ্ডিতের ওপর বিরূপ ছিলেন। ভদ্রমহিলা কমিটিকে অনুরোধ করেন যে, পণ্ডিতকে পদচ্যুত করা হোক। কী অপরাধ পণ্ডিতের ? তদন্তের ভার পড়ল বিদ্যাসাগরের উপর। বিদ্যাসাগর তদন্ত করে দেখলেন ঐ পণ্ডিতের কোনো দোষ নেই। কমিটির বৈঠকে বিদ্যাসাগর বললেন, ‘পণ্ডিত নিরপরাধ।’
কিন্তু কমিটির অধিকাংশ সদস্য য়ুরোপীয়। প্রধান শিক্ষয়িত্রী ভদ্রমহিলাও ফিরিঙ্গি। তাই য়ুরোপীয় সদস্যরা ভাবলেন, পণ্ডিতকে নির্দোষ বলে ছেড়ে দিলে ফিরিঙ্গি শিক্ষায়িত্রীর অপমান হবে। তাই তারা পণ্ডিতকে সাসপেণ্ড করবেন স্থির করলেন এবং এ ব্যাপারে বিদ্যাসাগরের মত জানতে চাইলেন। বিদ্যাসাগর হেসে বললেন, ‘আপনারা যদি ভাবেন কিছু বলিদান না করলে দেবী (অর্থাৎ ফিরিঙ্গি শিক্ষয়িত্রী) সন্তুষ্ট হবেন না তবে তাই করুন।’
সাহেবরা বিদ্যাসাগরের রসিকতা বুঝলেন। পণ্ডিতকে আর সাসপেন্ড করার সাহস পেলেন না।
Leave a Reply