ব্রাহ্মণ বনাম ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কাছে সবধরনের মানুষ দেখা করতে আসতেন। ব্রাহ্মণেরা যেমন আসতেন, তেমন অব্রাহ্মণরাও আসতেন। একদিন বিদ্যাসাগরের সঙ্গে এক ব্ৰাহ্মাণ দেখা করতে এলেন। সেই ব্ৰাহ্মাণ ছিলেন গোঁড়া। তিনি অন্যান্যদের প্রণাম পাওয়ার রীতিতে অভ্যস্ত ছিলেন। বিদ্যাসাগর নিজে যদিও ব্রাহ্মণ সন্তান, তবু তিনি ছিলেন এই প্রথার বিরোধী। সেই ব্ৰাহ্মণ আশা করেছিলেন, বিদ্যাসাগরের অনুগামীরা তাঁকে প্ৰণাম করবেন। কিন্তু তা হল না। বিদ্যাসাগরের একজন অনুগামীও ব্রাহ্মণটিকে প্ৰণাম করলেন না। অসন্তুষ্ট সেই ব্ৰাহ্মণ বিদ্যাসাগরকে বললেন, ‘এই সব অর্বািচীনরা কি জানে না যে, ব্ৰাহ্মণরা বেদজ্ঞ, বর্ণশ্রেষ্ঠ । একসময় তাঁরা দেশের কল্যাণ সাধন করেছেন। তাঁরা প্ৰত্যেকেই প্ৰণম্য ?’
গভীর মুখে সব শূনে বিদ্যাসাগর বললেন, ‘মশাই, এক সময় শ্ৰী বিষ্ণু বরাহ অবতার রূপে মর্তে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তাই বলে কি ডোমপাড়ার সব শূকরদের দেখলেই মাথানত করে। প্ৰণাম করতে হবে ?’
বিদ্যাসাগরের এহেন কথা শুনে লজ্জিত সেই ব্ৰাহ্মণ আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলেন। না। তৎক্ষনাৎ মাথার টিকি নাড়তে নাড়তে দৌড় লাগালেন।
Leave a Reply