ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগরের ভোজন সভা
ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগর ছিলেন অত্যন্ত ভোজন রসিক। খেতে এবং খাওয়াতে তিনি বড় ভালবাসতেন। তিনি কয়েকজন অন্তরঙ্গ বন্ধুকে নিয়ে ‘ভোজন সভা’ নামে একটি সংস্থা গড়ে তুলেছিলেন। সংস্থার সভ্য ছিল তা প্ৰায় জনাদশেক। কী কাজ ছিল এই সংস্থার ? ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজন-বন্ধুবান্ধবের বাড়িতে হঠাৎ দল বেঁধে গিয়ে এই সংস্থার সভ্যরা খেতে চাইতেন। এদের এই সংস্থার নাম ছড়িয়ে পড়েছিল ঘনিষ্ঠ মহলে। তাই প্রত্যেকেই সদা প্ৰস্তুত থাকতেন – এই বুঝি এল ভোজনসভার সভ্যারা!
একবার ঘটল এক কান্ড। কী কান্ড? ভোজনসভার সভ্যরা দল বেঁধে এক বন্ধুর বাড়িতে বেশ ঘটা করে খাওয়া দাওয়া করলেন। খাওয়া-দাওয়ার পরের দিন সংস্থার এক সভ্যোর অসুখ হল। পেটের অসুখ। বেশ কয়েকদিন তার দেখা নেই। কিছুদিন পর সুস্থ হয়ে সভ্যটি এলেন ভোজনসভার বন্ধুদের কাছে। বন্ধুরা তাঁকে নিয়ে ঠাট্টা-তামাসা করতে লাগলেন । তার উদ্দেশ্যে সবাই বললেন, এ বড়ো পেট-রোগা! ভোজনসভার সভ্য হওয়ার উপযুক্ত নয়। একে সংস্থা থেকে বাদ দেওয়া উচিত।
এতক্ষণ চুপ ছিলেন বিদ্যাসাগরমশাই। এবার তিনি মুখ খুললেন। হাসতে হাসতে বললেন, ‘না হে না, তোমরা ঠিক বলছি না, ওই তো আমাদের মধ্যে একমাত্র সভ্য যে আদর্শের জন্য জীবন পর্যন্ত দিতে উদ্যত । ওকে ভোজনসভা থেকে কোনো মতেই বাদ দেওয়া যায় না। ’
বিদ্যাসাগরের রসিকতা শুনে সবাই হাে-হাে করে হেসে উঠলেন।
Leave a Reply