একদিন কৃষ্ণনগর রাজসভায় বেশ তর্কবিতর্ক হচ্ছে- ঈশ্বর কী করেন। অনেকেই বলছে, তিনি কিছুই করেন না খান দানঘুমান। কেবল গোপাল চুপ করে আছে। তা দেখে রাজা বললেন, তুমি কিছুই বলছো না যে গোপাল? তোমার মত কি? ঈশ্বর কী করেন? তোমাকে এর উত্তর এখনই দিতে হবে।
গোপাল বললে, এ প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে মহারাজকে একটু কষ্ট পেতে হবে। আপনার রাজবেশ আমায় দিয়ে আমার এইদীনবেশ আপনাকে পরতে হবে এক দন্ডের জন্যে। তা যদি পারেন এর উত্তর হয়তমনের মতও পেতে পারেন।
মহারাজা এই অদ্ভূত কথা শুনে অবাক হয়ে গেলেন বটে, কিন্তু তখনই রাজি হয়ে, বেশ পরিবর্তন করলেন গোপালের সঙ্গে। কারণ তার স্থির বিশ্বাস ছিল- অকারণে গোপাল কোন কথা বলে না, বা কোন কাজ করে না। রাজা গোপালের কথায় প্রচুর বিশ্বাস করতেন। তিনি তখনি রাজপোষক গোপালকে দিলেন।
রাজপোষাক পরে গোপাল গিয়ে বসলো রাজার সিংহাসনে, আর রাজা এসে আসন গ্রহণ করলেন- সিংহাসনের সামনে সভাদসগণের মধ্যে। তখন রাজাসনে রাজবেশধারি গোপাল গম্ভীর হয়ে বললে, ঈশ্বর কী করেন, ঈশ্বর কী করেন, তা কেউই ভেবে ঠিক করতে পারেননি। এখন হাতে কলমে দেখুন, ঈশ্বর কী করেন? ঈশ্বর প্রতিনিয়ত এইভাবে রাজাকে ফকির আর ফকিরকে রাজ করছেন। মানুষের কর্মফল অনুযায়ী পুরষ্কার আর তিরষ্কার দেওয়াই হল ঈশ্বরের কাজ। ঈশ্বর দিনের পর রাত আর রাতের পর দিন করছেন জগতের কল্যানের জন্য। তিনি মঙ্গলময়। এই কথা বলেই গোপাল সিংহাসন থেকে নেমে এসে রাজাকে প্রণাম করে আবার নিজেরপোষাক পরল।
রাজা তাকে আলিঙ্গন করে বললে, গোপাল। ভাঁড় হলে কি হয়, আমার সভার ভিতর তুমিই একমাত্র প্রকৃত জ্ঞানী। অপ্রিয় হলেও খাঁটি কথা বলার জন্য তোমাকে সাধুবাদ জানাই।
পূর্ববর্তী:
« আজ তো শুক্রবার
« আজ তো শুক্রবার
পরবর্তী:
আজ যে ভীম একাদশী »
আজ যে ভীম একাদশী »
Leave a Reply