এক অপরূপা যুবতী আর এক বলবান যুবকের গল্প। পৃথিবীর আর বাকি তিন বিলিয়ন মানুষের মতোই জীবনযাপন করত তারা। তবে এ তো জানা কথা, দুজন যখন প্রেমে পড়ে, তখন বাকি তিন বিলিয়ন তাদের হিসাবে থাকে না।
প্রেমিক-প্রেমিকাদের সবচেয়ে প্রিয় কর্ম পরস্পরের ভালোবাসার পরীক্ষা নেওয়া। কাছে থাকার মুহূর্তে, দূরে থাকার সময়ে, সুসময়ে, দুঃসময়ে…
আমাদের গল্পের এই দুজনও মেতে উঠেছিল এ পরীক্ষায়।
‘সত্যি করে বলো তো,’ জানতে চাইল অপরূপা যুবতী, ‘আমি দেখতে কেমন? সুন্দরী?’
‘তুমি আমার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী,’ জানাল তাকে বলবান যুবক।
‘তুমি আমাকে ভালোবাস?’
‘এ কথা আবার জিজ্ঞেস করতে হয়!’
‘কেন আমাকে ভালোবাস? রূপের কারণে?’
‘হ্যাঁ, রূপের কারণে।’
‘হায়!’ অপরূপার কপাল কুঁচকে গেল আপনা থেকেই। ‘সুন্দরী মেয়েকে যেকোনো পুরুষই ভালোবাসবে। আমি অসুন্দরী হলে আমাকে ভালোবাসবে?’
‘বাসব না কেন!’ বলল বলবান। ‘এ তো কঠিন কিছু নয়। সবচেয়ে বড় কথা, তুমি ভালো মেয়ে এবং বুদ্ধিমতী।’
‘বুদ্ধিমতী? হুমম…বুদ্ধিমতীকে যেকোনো পুরুষই ভালোবাসবে। আমি যদি বোকা হই, তুমি আমাকে ভালোবাসবে?’
‘তুমি বোকা হলেও তোমাকে ভালোবাসব। তোমার সঙ্গে আত্মার যোগাযোগটাই বড় কথা। তুমি সংস্কৃতিমনা, তোমার সঙ্গে কথা বলেও শান্তি।’
‘কথা বলার কথা বলছ? সংস্কৃতিমনা মেয়েকে যেকোনো পুরুষই ভালোবাসবে। আমি অসংস্কৃতিমনা হলে তুমি আমাকে ভালোবাসবে?’
‘বলছি তো, ভালোবাসব! সংস্কৃতির কী এমন মূল্য আছে! লিখতে-গুনতে পারো, সেটাই যথেষ্ট।’
‘লিখতে-গুনতে? শিক্ষিত মেয়েকে যেকোনো পুরুষই ভালোবাসবে। আমি অশিক্ষিত হলে তুমি আমাকে ভালোবাসবে?’
‘উফ! তুমি চুপ করবে, প্লিজ? বললাম তো, ভালোবাসব। কথা শেষ। তুমি ভালো মেয়ে, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
‘ভালো মেয়ে? ভালো মেয়েকে যেকোনো পুরুষই ভালোবাসবে। আমি খারাপ মেয়ে হলে তুমি আমাকে ভালোবাসবে?’
‘খারাপ মেয়েকে?’ বক্র হাসি হাসল বলবান যুবক। ‘দ্যাখো, কোনো ইডিয়ট খুঁজে পাও কি না, যে খারাপ মেয়েকে ভালোবাসবে।’
‘দেখলে তো?’ উৎফুল্ল হয়ে উঠল অপরূপা যুবতী। ‘অথচ বলছিলে, ভালোবাস এবং বাসবে। এবার বুঝলে, তুমি কেমন মানুষ?’
‘শোনো, আমি যেমন মানুষ, আমাকে যেকোনো মেয়ে ভালোবাসবে। আর তুমি তেমন মানুষকে ভালোবাসতে থাকো, যেমন মানুষের অস্তিত্বই নেই।’
বলে বলবান যুবক দড়াম করে দরজা লাগিয়ে চলে গেল।
দেখলেন কাণ্ড!
পূর্ববর্তী:
« যুদ্ধাস্ত্র
« যুদ্ধাস্ত্র
পরবর্তী:
যে কারণে আমি আর ব্যাংকে যাই না »
যে কারণে আমি আর ব্যাংকে যাই না »
Leave a Reply