‘আজ কেউ কি খাবারদাবার দেবে আমাকে?’ বাসায় ঢুকতে ঢুকতে জিজ্ঞেস করল মামোনভ।
‘না,’ কেমন যেন বাঁকা সুরে উত্তর দিল স্ত্রী।
‘তোমাকে না দারুণ দেখাচ্ছে আজ!’ মামোনভ তোষামোদির চেষ্টা করল একটু। ‘তোমার কসমেটিক মাস্কটা একদম নিখুঁত লাগছে। চুল কোঁকড়া করার পিনগুলোও খুব মানিয়ে গেছে তোমাকে।’
‘আমার মা তোমাকে দেখেছে অন্য এক মেয়ের সঙ্গে!’ ট্রাম্পকার্ড ফেলল ক্ষুব্ধ স্ত্রী।
‘তবু ভালো, কোনো ছেলের সঙ্গে দেখেনি!’ মামোনভ বলল রসিকতা করে।
‘ছেলের সঙ্গে দেখলে কী হতো?’ স্ত্রী রসিকতাটা ধরতে পারল না।
‘এর মানে হচ্ছে, আমি স্বাভাবিক পুরুষ,’—বোঝাতে গিয়ে মামোনভ উপলব্ধি করল, ব্যর্থ রসিকতা করেছে সে।
‘কার সঙ্গে ছিলে তখন?’ স্ত্রীর হাতে বেলন।
‘কখন?’ স্পষ্টতই ক্রোধ প্রকাশ করল মামোনভ। ‘তুমি তো জান, আমি কাজ করি সকাল থেকে সন্ধে অবধি। বলতে পার, কৃষ্ণাঙ্গদের মতো।’
‘কৃষ্ণাঙ্গরা খুব কাজ করে নাকি?’ প্রতিবাদ করে স্ত্রী বলল।
মামোনভ উৎফুল্ল হয়ে উঠল মনে মনে। তাদের কথাবার্তা বর্ণবাদী প্রসঙ্গে মোড় নিচ্ছে।
ঠিক তখন খুব কৌতূহলোদ্দীপক একটা বাক্য বলল স্ত্রী, ‘বাচ্চা বানানো ছাড়া আর কোনো কাজ কৃষ্ণাঙ্গরা পারে?’
‘তুমি সেটা কোত্থেকে জান?’ রক্ষণাত্মক অবস্থান থেকে বেরিয়ে এসে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠল মামোনভের কথা।
‘ওই ইয়ে মানে…,’ কথার খেই হারিয়ে ফেলল স্ত্রী। ‘মা একবার বলেছিল…।’
‘আর তুমি তার কথা বিশ্বাস করেছ?’ বিজয়ীর ভঙ্গিতে মামোনভ এগিয়ে গেল তার ঘরের দিকে।
অপরাধমাখা নীরবতার পর স্ত্রী প্রশ্ন করল, ‘খাবে এখন?’
‘অবশ্যই,’ সাগ্রহে উত্তর দিল মামোনভ। ‘এখনই দাও। এত খিদে পেয়েছে!’
সংকলন ও অনুবাদ: মাসুদ মাহমুদ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ৩০, ২০১২
Leave a Reply