কী যে ইচ্ছে করছে আইসক্রিম খেতে! আমি জানি, আমার খেতে বারণ। আমার টনসিল। কিন্তু এ কারণে ইচ্ছের প্রাবল্য কমছে না একটুও। ওই বালকের নিষেধ নেই, সে গোগ্রাসে খাচ্ছে, প্রায় মুখ ডুবিয়ে। কিন্তু আমার খাওয়া নিষেধ।
সবাই খেতে পারে: রংচঙে কাপড় পরা ওই তরুণী, যে হেঁটে যাচ্ছে এক সৈনিকের হাত ধরে; ওই পুঁচকে মেয়ে, টি-শার্ট পরা কিশোর, সাইকেলচালক, যে হ্যান্ডেল ধরে রেখেছে এক হাতে, কারণ অন্য হাতে তার আইসক্রিম।
আজ দুঃসহ গরম। বাবা হাঁটছে আমার হাত ধরে, আর আমি আইসক্রিম খেতে চাই।
‘তুমি তো জান, লক্ষ্মীটি, আইসক্রিম খাওয়া তোমার জন্য বারণ। তোমার টনসিল।’
কিশোরটা তার জিবের ডগায় জড়িয়ে নিচ্ছে দ্রুত গলনোন্মুখ শীতলতা, সৈনিকের সঙ্গিনী আইসক্রিমে বসিয়ে দিচ্ছে তার দাঁত, সাইকেলারোহী তার আইসক্রিম-ধরা হাতটি রেখেছে নিজের শরীর থেকে একটু দূরে। সবাই আইসক্রিম উপভোগ করে মজা লুটছে, আনন্দ করছে; শুধু আমার খেতে বারণ। আমার টনসিল।
ভবিষ্যতে আমার জীবনে অনেক ঘটনা ঘটবে, যেগুলো এখনো আমার অজানা। ইরিনা আমাকে ফেলে ডিস্কোতে যাবে কোনো এক পদার্থবিদের সঙ্গে, আর আমি তার জানালার নিচে দাঁড়িয়ে যন্ত্রণা ও ঈর্ষায় পুড়তে থাকব। কোনো একসময় পরস্পরকে লেখা আমাদের চিঠিগুলো টুকরো টুকরো হয়ে উড়বে বাতাসে…আমি এসব এখনো জানি না। আমি এখন স্রেফ মারা যাচ্ছি আইসক্রিম খেতে।
ল. নভজেনভ
সংকলন ও অনুবাদ: মাসুদ মাহমুদ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ৩০, ২০১২
Leave a Reply