—এই যে ভাই, ছাদের ওপর কী করছেন?
—আত্মহত্যা করব।
—ওহ্, আচ্ছা। তাহলে সমস্যা নেই। কিন্তু সঙ্গে ক্যানেস্তারা কেন?
—গায়ে আগুন লাগিয়ে তারপর ঝাঁপ দেব; পুরোপুরি নিশ্চিত হতে এই ব্যবস্থা।
—খুব সম্ভব কাজ হবে না। পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার উপায় এখন নেই রে ভাই। সময়টাই যে ও-রকম।
—ভাবছেন, আমার কাজে বাধা পড়বে?
—হ্যাঁ। ধরুন, ঝাঁপ দেওয়ার পর আটকে যাবেন কোনো কিছুতে।
—তাহলে তো গলায় পাথর ঝুলিয়ে পানিতে ডুবে মরাটাই শ্রেয় মনে হচ্ছে।
—কিন্তু নদীর পানিতে এখন এত আবর্জনা! পানিতে ঝাঁপ দিলে আবর্জনা জড়িয়ে যাবে দুই পায়ে, তারপর ডোবার বদলে কলসির মতো ভাসতে থাকবেন।
—নিজের মাথায় গুলি করব তাহলে।
—তাতেও কাজ হবে না। দেখবেন, গুলি পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেছে অথবা বারুদ ভেজা। এসব এখন খুব তাড়াহুড়ো করে উৎপাদন করা হয় বলে মানসম্পন্ন হয় না একেবারেই।
—ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেব!
—ট্রেন তো বরাবরই লেট!
—গলায় দড়ি দিয়ে মরব!
—আপনার কি মাথা খারাপ হয়েছে? এখন বাড়িঘর কীভাবে বানায়, লক্ষ করেননি? হয় হুক খুলে, নয়তো দড়ি ছিঁড়ে হুড়মুড় করে পড়ে যাবেন।
—বিষাক্ত মাশরুম খাব পেট ভরে!
—মনে হয় না, কাজে দেবে। কোন মাশরুম বিষাক্ত, আর কোনটা বিষাক্ত নয়, এখন সেটা নির্ণয় করা প্রায় দুঃসাধ্য।
—অনাহারে থেকে নিজেকে মেরে ফেলব।
—বুঝলাম না!
—বললাম, অনাহারে থেকে নিজেকে মেরে ফেলব।
—হাসালেন! আমাদের দিনকাল কি অনাহারেই কাটছে না?
—ভাই রে…!
—কী?
—আমি তাহলে কী করব?
—একটি অব্যর্থ উপায় আছে। আপনাকে খুব সুন্দর জীবনযাপন শুরু করতে হবে। সুন্দর জীবনযাপন শুরু করলেই দেখবেন একদিন কেউ এসে আপনাকে খুন করে রেখে গেছে।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১২
Leave a Reply