রিংয়ের মেঝেতে শুয়ে আছি। অবস্থা একেবারেই সুবিধের নয়।
—ওয়ান! টু!—রেফারি গুনতে শুরু করল।
—এত দ্রুত গুনবেন না; তাড়াহুড়োর কিছু নেই তো—অনুনয় করে বললাম তাকে।
—এভাবে গোনারই নিয়ম। কোনো উপায় নেই। টু!
—আপনার নিজের ছেলে আছে?
—আছে।—রেফারি বলল বিড়বিড় করে,—থ্রি!
—ধরে নিন, আমি আপনার ছেলে, কাতর কণ্ঠে বললাম তাকে।
—ফোর!—একটু দুর্বল শোনাল কি তার গলা?
—এবং সে চোয়ালভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে ধুলোমাখা রিংয়ে। চোখে তার অসহায়ত্ব…
—ফাইভ! প্রায় ফিসফিস করে বলল রেফারি।
—শুয়ে শুয়ে সে তার বেচারা মা-বাবার কথা ভাবছে, যারা তাকে কত কষ্টে মানুষ করেছে। ভাবতে গিয়ে অশ্রু ঝরে পড়তে লাগল তার নক-আউট হয়ে যাওয়া গাল বেয়ে…
—সিক্স!—কেঁদে ফেলল রেফারি।
—পাঁচ হাজার দর্শক গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছে, হাততালি দিচ্ছে নিষ্ঠুর, নির্দয় বিজয়ীর উদ্দেশে, আর সে দর্শকদের নিজের পেশি দেখাতে দেখাতে মাঝেমধ্যে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে তার শিকারের দিকে…
—সেভেন!—দাঁতে দাঁত চেপে কোনোমতে বলল সে, তারপর আমার প্রতিপক্ষের দিকে তাকাল ঘৃণাভরা দৃষ্টিতে।
—হলের বাতিগুলো প্রায় নিভে এলে বিমর্ষ পিতা তার আধমরা সন্তানকে জড়িয়ে ধরবে এবং…
—তুমি বিজয়ী!—রেফারি ঘোষণা করল চিৎকার করে, তারপর আমাকে টেনে তুলল মেঝে থেকে।
বিজিতের সঙ্গে আলিঙ্গনের সময় তার কানে কানে বললাম:
—দেখলে তো, শক্তি দিয়ে কাজ হয় না, বুদ্ধি খাটাতে হয়।
পূর্ববর্তী:
« ইন্টেগ্রিটি
« ইন্টেগ্রিটি
পরবর্তী:
ইন্ডিকেটর বাতি »
ইন্ডিকেটর বাতি »
Leave a Reply