লাইনকে কীভাবে দাঁড় করানো যায়, কিছুতেই ভেবে বের করা যাচ্ছিল না। সরলরেখায় দাঁড় করালে লাইন এত লম্বা হবে যে তার লেজ গিয়ে পড়বে পশ্চিম ইউরোপে। সর্পিলাকার বৃত্তের আকার দিলে তার কেন্দ্রে লোকজন মারা যাবে ভিড়ের চাপে শ্বাসরোধ হয়ে। আঁকাবাঁকাভাবে দাঁড় করালে সেটা আর লাইন থাকবে না, হয়ে পড়বে বিশৃঙ্খল জটলা।
বাধ্য হয়ে অতিকায় এক আকাশচুম্বী দালান নির্মাণ করা হলো এবং লাইনকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হলো সিঁড়িতে, উলম্বভাবে। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন ছিল, কোথায় বিক্রি করা হবে—নিচে নাকি ওপরে। স্থির করা হলো, বিক্রি করা হবে ওপরে, যাতে নিচে লাইনের পেছনে দাঁড়াতে সুবিধা হয়।
আর সিদ্ধান্ত নেওয়া বাকি ছিল—কী বিক্রি করা হবে। কিন্তু বাছাই করার কোনো উপায় তখন আর ছিল না। স্থির করা হলো, শুধু প্যারাশুট বিক্রি করা হবে।
একেক ক্রেতাকে একটার বেশি প্যারাশুট দেওয়া হলো না। এর পরও অনেকে আকাশচুম্বী সেই দালান থেকে প্যারাশুটসহ লাফ দিয়ে নিচে নেমে আবার লাইনে দাঁড়াল এবং কিনেই
ছাড়ল দ্বিতীয় প্যারাশুট ।
প্যারাশুট শেষ হয়ে গেলে লোকজন প্যারাশুট ছাড়াই ঝাঁপ দিতে শুরু করল, যাতে ব্যর্থতা আর হতাশার অনুভূতি না থাকে মনে।
এবং কী অবাক কাণ্ড! ব্যর্থতা আর হতাশার অনুভূতি রইল না কারোর মনেই।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, অক্টোবর ১০, ২০১১
Leave a Reply