‘আমার সৎমায়ের মা আমারই স্ত্রী। বলুন তো, আমার স্ত্রী আমার কে হলো? আপনারও গোলমাল হয়ে গেল তো, আমার স্ত্রী আমার দিদিমা হলেন, তাই আমি স্ত্রীর নাতি হলাম।
একজন মন্ত্রী টেক্সাসের একটি উন্মাদ আশ্রম পরিদর্শন করতে এসে সেখানকার রোগীদের সঙ্গে বেশ আলাপ জমিয়ে নিলেন। কথা প্রসঙ্গে তিনি একজনকে প্রশ্ন করে ফেললেন, ‘আচ্ছা, বলুন তো আপনার জীবনে এমন কী ঘটেছিল, যার ফলে আপনাকে এখানে চলে আসতে হলো?’
উত্তরে ভদ্রলোক বললেন, ‘দেখুন, আমার আজকে যে পরিণতি আপনি দেখছেন, এ সবকিছুর মূলে রয়েছে আমার বিয়ে। এই বিয়েঘটিত আনুষঙ্গিক ব্যাপারটা বিশদভাবে আপনাকে না বললে আপনি বুঝতেই পারবেন না, আমি কেন আমার বিয়েকে কেন্দ্র করে এসব কথা বলছি।’
তিনি আরও বললেন, ‘বিয়ে করে আমি যে কী সাংঘাতিক ভুল করেছিলাম, সেটা আমি এখন মর্মে মর্মে উপলব্ধি করছি, কিন্তু এত দেরিতে এই উপলব্ধির কোনোই অর্থ হয় না। আমার বিয়েকে কেন্দ্র করে আনুষঙ্গিক ঘটনাগুলো শুনুন—
‘আমি বয়স্ক কন্যাসহ একজন বিধবাকে বিয়ে করি। সেই সূত্রে সেই কন্যা আমার কন্যা হলো।
‘এদিকে কিছুদিন বাদে আমার বাবা আমাদের কাছে বেড়াতে এলেন। এসেই আমাদের মেয়ের প্রেমে পড়ে গেলেন। তাকে বিয়েও করে ফেললেন। কাজেই যে ছিল আমার মেয়ে, সে আমার মা হয়ে গেল।
‘কিছুদিন বাদে আমার স্ত্রীর একটি পুত্র হলো। স্বাভাবিকভাবে সে আমার কন্যার ভাই হলো। অতএব আমার ছেলে আমার বাবার শালা হলো।
‘আমার মেয়ে বাবাকে বিয়ে করে আমার সৎমা হলো। আমার নবজাত পুত্রটি আমার সৎমায়ের ভাই বলে সে আমার মামা হয়ে গেল।
‘ইতিমধ্যে আমার বাবার স্ত্রী যে নাকি আমার কন্যা এবং অপর দিকে সৎমা, তার একটি ছেলে হলো। সেই ছেলেটি অবশ্যই আমার ভাই হলো। কেননা, সে তো আমার বাবারই ছেলে। সে কিন্তু আমার আবার নাতিও হলো, কারণ সে তো আমার কন্যার পুত্র।
‘আমার সৎমায়ের মা আমারই স্ত্রী। বলুন তো, আমার স্ত্রী আমার কে হলো? আপনারও গোলমাল হয়ে গেল তো, আমার স্ত্রী আমার দিদিমা হলেন, তাই আমি স্ত্রীর নাতি হলাম।
‘কিন্তু এতেও আমার সব বলা হলো না। যেহেতু আমি আমার দিদিমার স্বামী, আমি আমার নিজের দাদামশাই হয়ে গেলাম। এর পরও কি মাথা ঠিক রাখা যায়, আপনিই বলুন?’
মন্ত্রী বললেন, ‘আপনি ঠিকই বলেছেন, আপনার বিয়েকে কেন্দ্র করে আপনার জীবনে যা কিছু হয়েছে, তাতে কারোর পক্ষেই মাথা ঠিক রাখা সম্ভব নয়। বিভিন্ন সম্পর্কজনিত যে জটিলতা আপনার জীবনে সৃষ্টি হয়েছে,
তার জাল থেকে বেরিয়ে আসা খুবই মুশকিল। এর জন্য প্রচণ্ড মনোবল দরকার। আমার মনে হয়, তাহলেই আপনার সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
অনুবাদ: মাধুরী সিংহচৌধুরী
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ২৩, ২০১১
Leave a Reply