বর্তমানে আমি হলিক্রস স্কুলের একজন মহা বাধ্যগত ছাত্রী। কিন্তু তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণী আমি বরিশাল সরকারি বিদ্যালয়ে পড়েছি। আমাদের স্কুলে টিফিনের সময় শিঙাড়া, সমুচা ও কেক দেওয়ার নিয়ম ছিল। আমি ছিলাম ক্লাসের ক্যাপ্টেন। শ্রেণীতে উপস্থিত মোট ছাত্রীসংখ্যা ‘খালাদের’ জানিয়ে দেওয়া হতো, আর সেই পরিমাণ টিফিন দেওয়া হতো। আমার অত্যন্ত সম্মানিত মহা ন্যায়বান দুই বোনও এই স্কুলে পড়ত, তাদের কাছ থেকেই এক দিব্যজ্ঞান লাভ করলাম। তারা বলল, ছাত্রীদের সংখ্যা বলার সময় বাড়িয়ে বলতে হবে বা টিফিনের সময় গিয়ে খালাকে বলতে হবে, খালা, দুজন মেয়ে বেশি এসেছে। বুদ্ধিটা বেশ লোভনীয়। বাড়তি টিফিন নিজের পেটকে দেওয়া, কিন্তু প্রয়োগ করা সাহসে কুলোচ্ছিল না। একদিন অনেক কষ্টে সাহস জোগাড় করে খালাকে বললাম, চারজন বেশি এসেছে। খালা চারটি শিঙাড়া বেশি দিলেন। মহা আনন্দে আমি ও আমার এক বান্ধবী আমাদের যুদ্ধজয়ের গৌরবের কথা বলতে বলতে যাচ্ছিলাম। ঠিক এ সময় সামনে দেখতে পাই একজন শিক্ষককে, যাঁকে আমরা খুব ভয় পেতাম। তিনি আমাদের সব কথাই শুনেছিলেন। তারপর আর বলার অপেক্ষা থাকে না। শিঙাড়ার বদলে কী মারটাই না খেয়েছিলাম!
আদিবা শায়রা
পূর্ব নাখালপাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ২৮, ২০১১
Leave a Reply