আমি যখন চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ি, তখনকার কথা। বার্ষিক পরীক্ষা হতে প্রায় এক-দেড় মাস বাকি। ইতিমধ্যেই স্কুলে ছাত্রীদের আনাগোনা কমে গেছে। ক্লাসে মাত্র ১০-১২ জন ছাত্রী। টিফিন পিরিয়ডে সবাই টিফিন খাচ্ছে। তখন শুনি একটা মেয়ে হাউমাউ করে কাঁদছে। নিচে গিয়ে শুনলাম, মেয়েটা স্কুলের পেছনের দিকে গিয়ে তার টিফিন খাচ্ছিল, একসময় পানির বোতল আনার জন্য ক্লাসে যায় সে। এসে দেখে, টিফিন বক্স মাটিতে আর তার খাবার কে যেন খেয়ে গেছে। আশ্চর্যজনকভাবে কিছুক্ষণ পরপর সবার টিফিন খোয়া যেতে লাগল। আমি আর কয়েকজন মিলে টিফিন যেখানে খোয়া যাচ্ছিল, সেখানে গেলাম। সবার টিফিনের দিকে দেখতে দেখতে আমার টিফিন যে কখন হাওয়া হয়ে গেছে, খেয়ালই করিনি। আমার টিফিন যেখানে ছিল, তার ওপর একটা ঝাঁকড়া লিচুগাছ ছিল। সেটার ওপর থেকে খ্যাঁচর-ম্যাচর শব্দ আসছিল। ওপরে তাকিয়ে দেখি, একটা মুখপোড়া হনুমান কী জানি খাচ্ছে। আর সবাইকে ভেংচি কাটছে। কারও আর বুঝতে বাকি রইল না এটা কার কীর্তি! কী আর করা। সেদিন সবাইকে খালি পেটেই বাকি ক্লাসগুলো করতে হলো।
ফাইরুজ আনিকা
নিলটুলী, ফরিদপুর।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ২৮, ২০১১
Leave a Reply