২০০৯ সালের কথা। আন্তস্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতায় আমাদের স্কুল আর গার্লস স্কুল মুখোমুখি হবে। বিতর্ক প্রতিযোগিতার দুই দিন আগে বিষয় আর পক্ষ জানিয়ে দেওয়া হলো। বিষয় আর পক্ষ শুনে আমাদের মাথায় হাত! বিষয় ছিল ‘নারী জাতির উন্নয়নে শিক্ষাই প্রধান মাধ্যম’। আর আমাদের বলতে হবে বিপক্ষে! নিশ্চিত হেরে মুখে চুনকালি মাখার আশঙ্কায় আমরা হতবাক। যা হোক, নিরাশার ডালি বোঝাই করে সুফিয়া ম্যাডামের সঙ্গে আমরা তিন তার্কিক—দীপ্ত, আবীর আর আমি গেলাম বিতর্ক করতে। কিন্তু বিচারকদের দেখে আমাদের মনে আশার আলো জ্বলে উঠল! কারণ, বিচারকেরা ছিলেন শহরের এমন কয়েকজন (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক), যাঁরা বিতর্কের বিচারের ব্যাপারে কিছু বোঝেন কি না সন্দেহ! তাই তাঁদের টেকনিকে ঘায়েলের ফন্দি আঁটলাম আমরা। এমন কিছু সমাজবিজ্ঞানী ও বিজ্ঞানীর নাম ও উক্তি বের করতে লাগলাম, যা কল্পনাতীত। বিশ্বের ক্রীড়াঙ্গনের খেলোয়াড়ের নামের মিশ্রণ যেমন স্টিফেন গুচ (স্টিফেন ফ্লেমিং আর গ্রাহাম গুচের মিশ্রণ) থেকে শুরু করে অ্যান্ড্রু বেভানের (অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস আর মাইকেল বেভানের মিশ্রণ) নাম আর স্বরচিত তথাকথিত উক্তি দিয়ে বিচারকদের তাক লাগিয়ে দিলাম। তাঁদের প্রসন্ন হাসিতেই বুঝতে পারছিলাম, নম্বরের ঝোলা ভারী হচ্ছে! অপর দিকে প্রতিপক্ষরা বিচারকের ভাব দেখে চরম হতাশ। তাদের শেষ বক্তা ডায়াসে বক্তব্য দিতে উঠে বিচারকদের অমন রূপ দেখে বক্তব্য দিতে দিতে হঠাৎই চিৎকার করে উঠল, ‘উহ! না, আর পারছি না।’ বলেই ডায়াস ছেড়ে দে ছুট!
মাসুক-আল-ইস্তি
জয়নগর, নেত্রকোনা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ২৮, ২০১১
Leave a Reply