‘তুমি আমাকে ভালোবাসো?’
‘বাসি।’
‘খুব?’
‘খুব।’
‘তাহলে চলো না, বিয়ে করে ফেলি?’
‘আমি তো বিয়ের বিপক্ষে নই।’
‘তাহলে বাধা কোথায়?’
‘আমার কোনো বাধা নেই।’
‘তাহলে বিয়ে করে ফেলা যাক।’
‘ঠিক আছে…কিন্তু আমরা থাকব কোথায়?’
‘মমম…শুরুর দিকে ঘর ভাড়া নেব।’
‘ঠিক। কিন্তু ভাড়ার টাকা আসবে কোত্থেকে?’
‘ইভনিং কোর্সে ভর্তি হব, দিনের বেলা কাজ করব।’
‘ঠিক বলেছ। আর রান্না করবে কে?’
‘আমার মা চমৎকার রান্না করে। তোমার গ্র্যানি এসেও রান্না করে দিয়ে যাবে মাঝেমধ্যে।’
‘তা-ই যদি হবে, তাহলে বিয়ে করার দরকারটা কোথায়?’
‘আমরা বাচ্চা নেব, তাকে বড় করব।’
‘কিন্তু সে তো সারাক্ষণ চিৎকার করবে, সারাটা সময় বসে থাকতে হবে তার সঙ্গে। সিনেমা-থিয়েটারে যাওয়া শিকেয় উঠবে।’
‘তাহলে আমরা বাচ্চা নেব না। সিনেমা-থিয়েটারে যাব শুধু। আর কুকুর পুষব।’
‘কুকুর নিয়ে সিনেমা-থিয়েটারে ঢুকতে দেবে না।’
‘তাহলে কুকুরও পুষব না। ঝাড়া হাত-পা নিয়ে সিনেমা-থিয়েটারে যাব।’
‘কিন্তু সিনেমা-থিয়েটারে তো আমরা এখনো যাই।’
‘যাই।’
‘তো?’
‘তখন আমরা যাব একসঙ্গে।’
‘আমরা সব সময় একসঙ্গে থাকি, তুমি সেটা চাও?’
‘সব সময়? বিরক্তি চলে আসবে না?…তবে আমরা যদি কাজ করতে শুরু করি, তাহলে এমনিতেই সারাক্ষণ একসঙ্গে থাকা হবে না।’
‘তার মানে, সারাক্ষণ একসঙ্গে না থাকতে চাইলে আমাদের কাজ করতে হবে? আমরা তো এখন কাজ করি না, তবু সারাক্ষণ একসঙ্গে থাকা হয় না, ঠিক?’
‘তাহলে তখন কাজ করব না।’
‘কাজ না করলে টাকা আসবে কোত্থেকে?’
‘তাহলে তখন আমরা একসঙ্গে বাস করব না।’
‘হ্যাঁ, তাহলে ঘর ভাড়া নেওয়ার প্রয়োজনও হবে না।’
‘ঘর না থাকলে আমার মা বাসাতেই রান্না করবে।’
‘আর আমার গ্র্যানি আমাদের বাসাতেই।’
‘তাহলে তো বিয়ে করারও প্রয়োজন নেই কোনো।’
‘আমি তো সেটাই বলছিলাম।’
‘সত্যি বলতে কি, আমরা বিয়ে করব কি করব না, সেটা তো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নয়। আসল কথা হচ্ছে, আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি। তুমি আমাকে ভালোবাসো, তাই না?’
‘বাসি।’
‘খুব?’
‘খুব।’
‘তাহলে চলো না, বিয়ে করে ফেলি?’
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ১৪, ২০১১
Leave a Reply