থার্ড পিরিয়ডে আজাদ স্যারের রসায়ন ক্লাস ভয়ংকর বিরক্তিকর। তাই সেকেন্ড পিরিয়ড শেষের ঘণ্টা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই গিয়ে উপস্থিত হলাম কলেজ ক্যানটিনে। ক্যানটিনের শেষ মাথায় ডান দিকের কোনায় আমার পছন্দের বেঞ্চটায় গিয়ে দেখলাম, সেখানে সাকি আগে থেকেই বসে আছে। আমাকে দেখে একটু সরে বসার জায়গা দিয়ে বলল, ‘দেখেছিস শাহরিয়ার? গতকাল রসালোর পাঠক সংখ্যা বের হলো, কিন্তু আমার তিনটি লেখার একটিও ছাপাল না।’ ‘কী আর করবি বল? কিন্তু সামনেই আরেকটি সংখ্যার ঘোষণা দিল না? এটার জন্য লেখা শুরু কর।’ সাকি এবার একটু নড়েচড়ে বসে বলল, ‘হ্যাঁ, এবার সত্যিই হাসির কয়েকটা লেখা পাঠাব।’ ‘তোর জীবনে তো আবার কমেডির অভাব নেই।’ ‘আমিও সুযোগে একটু ফোড়ন কাটলাম।’ ‘আরে দূর! সত্য ঘটনা কে লেখে? আমি বানানো ঘটনাকেই ‘‘জীবন থেকে নেওয়া’’ বলে চালিয়ে দেব। দেখিস, এবার ছাপা হবেই।’ বলে তখনি যেন গল্প বানাতে লাগল সে। তার এক সপ্তাহ পর আবার সেই মহান কাজ করতে ক্যানটিনে গিয়ে সাকির সঙ্গে দেখা। ‘কিরে, তোর লেখা পাঠিয়েছিস?’ না রে দোস্ত, সত্য বানানো যে এত কঠিন, আগে জানতাম না।’ আমি একটু মজা পেয়ে বললাম, ‘আচ্ছা, তোর এই ঘটনাটা আমি লিখে পাঠিয়ে দিই?’ ‘দিবি নাকি? ঠিক আছে, পাঠিয়ে দে। দেখি ছাপা হয় কি না।’ তো আর কী, দিলাম পাঠিয়ে। দেখি ছাপা হয় কি না!
আচ্ছা, এ ঘটনাটাও আবার বানানো না তো?
শাহরিয়ার কবির
এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা।
Leave a Reply