ভরদুপুরে গ্রামের মেঠো পথ ধরে স্কুল থেকে ফিরছি। পাঁচ-ছয়জনের ছোটখাটো দল, এর মধ্যে আমিই সবার ছোট, শিশু শ্রেণীতে পড়ি। হঠাৎ দলের এক সিনিয়র ভাই ক্লাস ওয়ানের তুষার চিৎকার করে উঠল, ছেলেধরা! আমরা সবাই পেছনে তাকালাম, সে চিৎকার করছে, ‘আমি মাইক্রোবাসের ভেতরে বড় একটা ছুরি দেখেছি!’ (যদিও এত দূর থেকে মাইক্রোবাসের ভেতর ছুরি দেখা অসম্ভব) আমাদের জন্য মাইক্রোবাস দেখাটাই যথেষ্ট ছিল। সবাই দিলাম দৌড়, আমি সবার ছোট, অতএব সবার পেছনে। এর মধ্যে আমার স্যান্ডেল ছিঁড়ে গেছে। খালি পায়ে প্রাণপণ দৌড়াচ্ছি তো দৌড়াচ্ছি। এর মধ্যে আমার বড় ভাইবোনেরা বড় রাস্তার বাঁক ঘুরে ছোট রাস্তায় গিয়ে উঠেছে। আমি আর তাদের দেখতে পারছি না। ভয়ে আমার আর পা চলে না। ওখানে দাঁড়িয়েই কান্না শুরু করে দিলাম। পেছনে তাকিয়ে দেখি, দাঁড়িয়ে থাকা মাইক্রোবাসটা চলছে এবং আমার খুব সামনে। এবার ভয়ে কান্নাও বন্ধ হয়ে গেল। ১০ সেকেন্ডের মধ্যে মাইক্রোবাসটা ধুলা উড়িয়ে আমার পাশ কাটিয়ে চলে গেল। যদিও ভয় কেটে গেল, তার পরও একটা দুঃখ রয়ে গেল, ছেলেধরা আমাকে পছন্দ করেনি! (শুনেছি সুন্দর সুন্দর ছেলেমেয়েকে ওরা ধরে নিয়ে যায়)।
আফিয়া সুলতানা
মিরপুর ১০, ঢাকা।
Leave a Reply